ঢাকা, বুধবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩২, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

স্ত্রীকে খুন, স্বামীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৮, অক্টোবর ৭, ২০২৫
স্ত্রীকে খুন, স্বামীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড খুনের দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

বরগুনা: যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী, সতিন ও মেয়ের জামাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মাজেদ তালুকদারের ছেলে কবির তালুকদার (৫৯), তার দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচী বেগম (৫০) ও এলাচীর ছেলে সুজন (২৫)। যিনি (সুজন) কবিরের মেয়ের জামাতা ও একই গ্রামের মোস্তফার ছেলে।

মামলার বাদী নিহত মহিমা বেগমের ছেলে হেলাল তালুকদার, যিনি মামলার প্রধান সাক্ষীও ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে কবির তালুকদার মহিমা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই তিনি যৌতুকের দাবিতে মহিমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। পরে কবিরের সঙ্গে প্রতিবেশী এলাচী বেগমের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বাদীর বোন রেখা বেগম একদিন তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে প্রতিবাদ করলে এলাচী ও তার ছেলে সুজন তাকে নির্যাতন শুরু করে। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রেখা আত্মহত্যা করেন। তিন-চার বছর পর কবির এলাচীকে বিয়ে করেন, যা মহিমা বেগম মেনে নিতে পারেননি। এরপর তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে কবির পরিকল্পনা করে ছেলে হেলালকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দেন। দুপুরে মহিমাকে বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দিতে চাপ দেন। তিনি রাজি না হলে কবির, এলাচী ও সুজন মিলে তাকে বিদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করেন এবং ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন।

বাদী হেলাল তালুকদার বলেন, আমি আমার মায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায়ে সন্তুষ্ট। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হোসনেয়ারা শিপু বলেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন, তা সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রমাণিত হয়েছে। এ রায় সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম তরু ফরাজী (কবির তালুকদারের পক্ষে) এবং অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন (এলাচী বেগম ও সুজনের পক্ষে)।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।