ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

হকি ফেডারেশন এবং বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ: রোমান

আবীর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
হকি ফেডারেশন এবং বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ: রোমান

দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে হকির ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ। হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে এবং খেলার উন্নতি ঘটানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন।

তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।  

এবারের আসরের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান 'এসিই'। হকির এই আয়োজন নিয়ে বেশ আশাবাদী জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় রোমান সরকার। আসর নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথা জানালেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-কে।

বাংলানিউজ: প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ফ্রাঞ্চাইজি হকি লিগ শুরু হতে যাচ্ছে। নতুন এক অধ্যায়ের শুরু হতে চলেছে বাংলাদেশের হকিতে। এর আগে অনেক কর্মকর্তারাই এই লিগের কথা বললেও তা হয়ে উঠেনি। এবার হতে যাচ্ছে। আপনার কেমন লাগছে?

রোমান সরকার: আলহামদুলিল্লাহ, এটা অনেক ভালো একটা সুযোগ তৈরি হচ্ছে হকির জন্য। আমি মনে করি আমাদের দেশের হকি পেছনের দিকে চলে যাচ্ছিল। সেটা এখন সামনের দিকে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। হকিতে আমাদের একটা ভালো সুযোগ আছে। কারণ আমরা র্যাংকিংয়ে ২৭ নম্বরে আছি। বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে পারলে আমাদের আরও উন্নতি হবে। আমরা বিশ্বকাপে খেলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবো।

বাংলানিউজ: হকির উন্নতির জন্য বেশি বেশি খেলা যেমন প্রয়োজন, তেমন খেলোয়াড়ও প্রয়োজন। দেশের হকিতে পাইপলাইনের খেলোয়াড়দের নিয়ে যদি কিছু বলতেন...

রোমান সরকার: পাইপলাইনে এখন আমাদের তেমন খেলোয়াড় নেই। শুধু বিকেএসপি থেকেই খেলোয়াড়রা আসছে। তবে এই ফ্রাঞ্চাইজ লিগ যদি নিয়মিত হয়, হকির লিগের খেলা যদি নিয়মিত মাঠে থাকে; তবে আরও খেলোয়াড় উঠে আসবে। যখন খেলোয়াড়রা দেখবে হকিতে ভালো একটা ভবিষ্যৎ আছে; তখন বিভিন্ন জেলা পর্যায় থেকেও খেলোয়াড় উঠে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বাংলানিউজ: আপনি প্রায় দেড় যুগ ধরে হকির সঙ্গে রয়েছেন। বিকেএসপি থেকে জাতীয় দলে অনেক লম্বা সময় ধরেই আছেন। আপনি আগে দেখেছেন হকি ফেডারেশনের ভেতরের কোন্দলে অনেক লিগই হয়নি। সেখান থেকে সরে এসে হকি ফেডারেশন এখন অনেক উন্নত। একটা ভিন্ন মাত্রার লিগ করতে চলেছে। এটা আপনি কিভাবে দেখেন?

রোমান সরকার: প্রথমত আমি ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের ফেডারেশনের সভাপতি বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফসহ ফেডারেশনের সকলকেই ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য। আমাদের কোচ গোবিনাথনও এই আয়োজনের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। সকলেই চেষ্টা করছে কিভাবে হকিকে এগিয়ে নেয়া যায়। ফেডারেশনের পাশাপাশি অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এসিই। তারা এটার পৃষ্ঠপোষক। তাদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আব্দুস সাদেক ভাই আমাদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বড় মাপের হকি খেলোয়াড় ছিলেন। তার পরিবারের প্রায় সকলেই হকি খেলার সঙ্গে জড়িত। ইশতিয়াক সাদেক ভাই এই লিগের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। তারা হকিকে ভালোবাসেন। হকিকে এগিয়ে নিতে চান।  

বাংলানিউজ: ছয়টি ফ্রাঞ্চাইজি এবারের লিগে অংশগ্রহণ করছে। তাদের প্রত্যাশা কি পূরণ হবে?

রোমান সরকার: আমি অবশ্যেই যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান এখানে এগিয়ে এসেছে তাদের ধন্যবাদ দিতে চাই। বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসিই’র মাধ্যমেই তারা এখানে এসেছে। তাদেরও ধন্যবাদ দিতে হবে। তারা না এলে হয়তো এটা সম্ভব হতো না। আমরা ভালো খেলা উপহার দিয়ে এই আসর সফল করতে চাই। যেন যেই প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসছে তাদের আশা পূরণ হয়।

বাংলানিউজ: সাকিব আল হাসান দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম উজ্জ্বল তারা। তার প্রতিষ্ঠানও হকিতে দল নিচ্ছে। এটা আপনাদের জন্য কতটা অনুপ্রেরণাদায়ক।

রোমান সরকার: সাকিব আল হাসানের হকিতে আসাটা আমাদের জন্য অবশ্যেই অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম সেরা তারকা এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার আসার ফলে এই লিগে আলো অনেকটাই বেড়ে গেছে। দেশের সকলের নজর থাকবে এখানে। সাকিব ভাই নিজেও বিকেএসপির ছাত্র ছিলেন। তার রুমে তার বন্ধু ছিলেন পিন্টু ভাই, তিনিও হকি খেলতেন। হকির প্রতি তারও একটা ভালোবাসা আছে।

বাংলানিউজ: সম্পূর্ণ নতুন একটা টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের হকির জন্য।  আপনার এটা নিয়ে কিছু বলার আছে?

রোমান সরকার: কিভাবে খেলা হবে, পদ্ধতি কি হবে এটা নিয়ে এখনও আমরা কিছু জানি না। তবে সংবাদমাধ্যমে দেখেছি প্রতি দলে একজন আইকন প্লেয়ার থাকবে, এরপর এ প্লাস, এ, বি এবং সি ক্যাটাগরির খেলোয়াড় থাকবে।  

বাংলানিউজ: সব ফ্রাঞ্চাইজি লিগের মতো হকির লিগেও বিদেশি খেলোয়াড় থাকবে। এ বিষয়টাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

রোমান সরকার: না আসলে এটা নিয়ে আমাদের অভিযোগ নেই। থাকার কথাও না। বিদেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেললে অভিজ্ঞতা আরও বাড়বে। আমরা আরও পরিণত হবো। আর এটা নিয়ে কিছু করার হলে তা আয়োজকরাই সিদ্ধান্ত নেবে। তারা সব কিছু ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

বাংলানিউজ: বিভিন্ন বাহিনী, বিকেএসপি এবং পুরাতন ঢাকাকে কেন্দ্র করে একটা হকি জোন আছে। এর বাইরের খেলোয়াড়রা অভিযোগ করে তারা তেমন সুযোগ সুবিধা পায় না। এটা নিয়ে আপনি কি বলবেন?

রোমান সরকার: আসলে এর বাইরের যে খেলোয়াড়রা আছে এদের নিজেদের চেনাতে হলে ঘরোয় টুর্নামেন্ট দরকার। বেশি বেশি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হলে জোনাল খেলোয়াড়রা নিজেদের তুলে ধরতে পারবেন। এটা আসলে ফেডারেশনই ভালো বলতে পারবে তাদের বিষয়ে।  

বাংলানিউজ: এই টুর্নামেন্ট নিয়ে সকলের প্রত্যাশা অনেক। বলা হচ্ছে এই টুর্নামেন্টের ফলে বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা বাড়বে। এই বিষয়ে আপনার কি মত?

রোমান সরকার: এই টুর্নামেন্টে ফলে আমরা অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবো। নিজেদের যাচাই করার সুযোগ পাবো। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নিজেদের যাচাই করে আত্মবিশ্বাসটা ঝালিয়ে নেয়া যাবে। আর র্যাংকিংয়ে উন্নতি করতে হলে আমাদের অনেক প্রীতি ম্যাচ খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস এই টুর্নামেন্ট আমাদের অনেক এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।