আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার পার্শ্ববর্তী মহেশখলা এলাকায় ১৫ বিঘা জমির ওপর বিশাল নার্সারি গড়ে তুলেছেন পূর্ণেন্দু দত্ত। তার এই নার্সারিটি গাছপালার বৈচিত্র্যের কারণে সবার কাছে পরিচিত।
তবে তার এই নার্সারি খুব দ্রুত নতুন পরিচয়ে পরিচিত হতে চলছে অন্য একটি কারণে। পূর্ণেন্দু তার নার্সারিতে ফুল-ফলের গাছের পাশাপাশি সংগ্রহ করছেন দেশ-বিদেশের নানা জাতের কবুতর ও পাখি। এর জন্য তিনি তার এই নার্সারিতে কবুতর ও পাখি রাখার জন্য দুটি বড় আকারের শেড তৈরি করেছেন। এই শেডগুলোর ভেতরে খাঁচার মধ্যে রাখা আছে নানা জাতের পাখি ও কবুতর। আবার চিড়িয়াখানা মতো করে তৈরি করেছেন ঘর। যার মধ্যে উড়ে বেড়াচ্ছে নানা জাতের কবুতর।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত দেড় বছরে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ জাতের দেশ-বিদেশের কবুতর সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি জাত হলো লংফেন্টেন, ফেন্টেন, সিরাজ, লাহোরী সিরাজ, হাঙ্গেরিয়ান হাউজ, বুখাড়া, স্ট্রেচার, যেকোপিন, পোর্টার, গিরিবাজ ও মাদ্রাজি গিরিবাজ। এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ শখের বসেই এই কবুতর ও পাখিগুলো পালন করছেন তিনি।
তার কাছে যেসব কবুতর রয়েছে, এদের কিছু কিছু জাতের এক জোড়ার দাম ৩০ থেকে ৩৫ হাজার রুপি পর্যন্ত। তার সংগ্রহের বেশির ভাগ কবুতরই দামি। মূলত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই জনপ্রিয়তা কবুতরগুলোর দামের অন্যতম কারণ। কবুতরের পাশাপাশি পাখির মধ্যে তার সংগ্রহে রয়েছে লাভ বার্ড, জাভা, বদ্রি, ককটেল, ফিঙে ইত্যাদি।
বাণিজ্যিকভাবে পালনের পরিকল্পনা আছে কি? বাংলানিউজের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ভবিষ্যতে যদি এমন কোনো ইচ্ছে হয়, তবে তিনি তা করতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ শখের বসে পালন করছেন। এই পাখি ও কবুতর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এবং বেশ কিছু বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে জানান।
তিনি জানান, এই সব পাখি কিনতে তার প্রায় সাড়ে তিন লাখ রুপি খরচ হয়েছে। আর পাখিদের জন্য শেড তৈরি করতে প্রায় দুই লাখ রুপি খরচ হয়েছে।
অনেক বছর ধরে তিনি গাছপালা নিয়ে রয়েছেন, হঠাৎ করে কবুতর পালনের নেশা মাথায় এলো কি করে? উত্তরে পূর্ণেন্দু জানান, গাছপালা সংগ্রহ করার জন্য তিনি দেশ এমনকি বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কবুতর ও পাখি দেখে তার মনের মধ্যে আসে যদি এগুলোকে সংগ্রহ করা যায় তাহলে কেমন হতো। এই ভাবনা থেকে তিনি কবুতর ও পাখি সংগ্রহ করা শুরু করেছেন। সারাদিন কাজের মধ্যে যখন তাদের কাছে যান, তাদের নানা ভাবভঙ্গি দেখলে ভালো লাগে বলে জানান তিনি।
পূর্ণেন্দু জানান, কবুতর ও পাখি পালনের প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। মূলত এদের রোগ অসুখ সম্পর্কে সঠিক অভিজ্ঞতা না এমনটা হয়েছে। এছাড়া, যে কেউ চাইলেই ঝটপট তাদের রোগ ও অসুখের বিষয়ে বুঝতে পারে না। তবে তিনি এখন রোগের বিষয়গুলো রপ্ত করে নিয়েছেন। এখন আর রোগে কিংবা অসুখে কোনো সমস্যা হয় না বলেও জানান তিনি।
যদি কেউ শখের বসে বা জীবিকা হিসেবে পাখি পালন করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে তার কি বার্তা থাকবে? জানতে চাইলে পূর্ণেন্দু বলেন, যে কেউ জীবিকা হিসেবে কবুতর পালনকে বেছে নিতে পারেন। দিন দিন এই সব সুন্দর সুন্দর কবুতরের চাহিদা বাড়ছে। বেশ ভালো দামে এগুলো বিক্রি হচ্ছে, তাই যে কেউ জীবিকা হিসেবে বেছে নিতে পারেন কবুতর পালনকে। তবে শুরুতে পাখিদের রোগের বিষয়ে ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরি বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
এসসিএন/এসআইএ