আগরতলা: খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনকে সামনে রেখে ত্রিপুরায় চলছে ১৫তম ‘খ্রিস্টমাস বণিক-২০১৬’ অর্থাৎ খ্রিস্টমাস উৎসব। পশ্চিম জেলার অন্তর্গত খুমলুং এলাকায় চলছে এ উৎসব।
উৎসবে একদিকে যেমন ত্রিপুরার উপজাতিদের নৃত্য সংগীতসহ সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে, সেইসঙ্গে রয়েছে প্রথাগত খাবার-দাবার, প্রথাগত পোশাক ও গহনার দোকান। তবে উপজাতিদের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিপ্রথার মানুষেরও নজর প্রথাগত খাবারে।
খাবারগুলোর যেমন বিচিত্র নাম তেমন স্বাদও বিচিত্র, রান্নার উপকরণসহ পদ্ধতিতে আছে প্রকৃতি আর পাহাড়ের ছোঁয়া। এর মধ্যে চিরাচরিত কিছু খাবার-দাবার হলো বাঙ্গুই, ওয়াসুং, ইগমা, গোদক, ভর্তা, বেম্বো স্টিক চিকেন আরও কতোকি।
বাঙ্গুই আসলে ভাত, তবে এর রান্নার পদ্ধতি ভিন্ন। বিন্নি চালের সঙ্গে কোরানো নারকেল, বাদাম ইত্যাদি মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করে এই মণ্ড কলাপাতায় মুড়ে গরম জলের হাড়িতে সেদ্ধ করা হয়।
ওয়াসুং হলো বাঁশের ভেতর রান্না করা মাংস। মুরগির মাংসকে পেঁয়াজ, আদা, লবণসহ কিছু মশলা দিয়ে মেখে বাঁশের চোঙার ভেতর ঢুকিয়ে কাঠ কয়লার আঁচে পুড়িয়ে রান্না করা হয়। অভিজ্ঞতা না থাকলে ওয়াসুং রান্নার চেষ্টা করাও বৃথা।
ইগমা পুটী, মোড়ল ইত্যাদি ছোট মাছ কাঁচা হলুদ, পেঁয়াজ ইত্যাদি মশলা দিয়ে মেখে হলুদ গাছের পাতার মধ্যে মুড়িয়ে কয়লার আঁচে পুড়িয়ে রান্না করা হয়।
গোদক হলো তেল ছাড়া সবজি রান্নার একটি পদ্ধতি। এই গোদক বিভিন্ন সবজি ব্যবহার করা হলেও এর মূল উপাদান থাকে বাঁশ কোরল (কচি বাঁশ) অথবা কচি কাঁঠাল।
তাছাড়াও এই উৎসব প্রাঙ্গণে পাওয়া যাচ্ছে বাঁশের কাঠির মোরগ ভাজা, যা মূলত প্রচলিত শিক কবাবের আদি রূপ। আরও রয়েছে কাঁচা হলুদসহ নানা মসলার চাটনি।
চিকেন বলতেই এখন ব্রয়লার মুরগিই ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু এই মেলায় সব প্রায় চিকেন সামগ্রীই তৈরি হচ্ছে উপজাতি এলাকার দেশি মোরগ দিয়ে। তাই এই মেলার এটি একটি বাড়তি পাওনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৬
এসসিএন/জেডএস