ফোনে যোগাযোগ করতেই খানিকটা নমুনা মিললো। সরাসরি বিধানসভা ভবনে ডেকে পাঠালেন।
ভেতরে ঢুকে তার সম্পর্কে শোনা প্রশংসা আর বিশেষণগুলো একে একে সত্যি হয়ে দেখা দিলো। খাঁটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভাষার টোন, সহজাত আন্তরিকতা, সহজ-সরল ব্যক্তিত্ববান মানুষটি চট করে আপন হয়ে ওঠে।
প্রাথমিক পরিচয় পর্ব, কুশলাদি, এটা-সেটা নিয়ে কথা হয়। ত্রিপুরা বেড়াতে যাওয়া তাই কথা গিয়ে ঠেকে পর্যটন তথা ত্রিপুরার দর্শনীয় স্থানগুলো নিয়ে।
ডেপুটি স্পিকার পবিত্র করও ক্লান্তি ছাড়া জানাতে থাকেন, আমাদের হিস্টরিকাল যে প্লেসগুলো রয়েছে সেগুলো ভীষণ আকর্ষণীয়। বিশেষ করে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো। কতোগুলো রয়েছে খুবই পুরনো যেমন- ঊনকোটি। এটার সাল এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৫০০ থেকে ৬০০ খৃস্টাব্দের।
‘আমরা কয়েক বছর আগে ছবিমুড়া বলে আরও একটি ভাস্কর্য খুঁজে পেয়েছি। এটি গোমতী নদীর তীরে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা। দারুণ রোমাঞ্চকর একটি অভিজ্ঞতা যে, পাহাড়ের ভিতর দিয়ে যাবেন, পাহাড়ের দু’পাশে সব দেব-দেবীদের মূর্তি খোদাই করা। স্ড বোটের মাধ্যমে আমরা যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ’বিষয় ধরে কথোপকথন চলতে থাকে। ডেপুটি স্পিকার বলে চলেন, আরেকটি আশ্চর্যজনক স্থাপনা হচ্ছে নীরমহল। চতুর্দিকে জল মাঝখানে প্রাসাদ। তখনকার রাজারা গরমের সময় এই প্রাসাদে থাকতেন। অবিশ্বাস্য সুন্দর। এখন জলের ধারণক্ষমতা কমে গেছে। আমরা রেনোভেট করছি যেনো নাব্যতা বাড়ানো যায়। বরষার সময় ঠিক আছে কিন্তু অন্যসময় জল একটু কমে যায়।
দায়িত্ব নিয়েই বললেন, আমাদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গাটি হলো- এভারগ্রিন নেচার। ত্রিপুরার প্রকৃতি সব ঋতুতেই সবুজ থাকে। ন্যাচারাল জু রয়েছে। এছাড়া উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ ও স্টেট মিউজিয়াম, চতুর্দশ দেবতা বাড়ি, জগন্নাথ মন্দির, বেনুবন বিহার, গেদুমিঞা মসজিদ, বনবীথি, সিপাহীজলা অভয়রাণ্য, তৃষ্ণা অভয়ারণ্য ইত্যাদি তো রয়েছেই। আমাদের রেলওয়ে ভবনটিও দেখার মতো।
সব মিলিয়ে ত্রিপুরা বিরাট পর্যটন সার্কিট হতে পারে। আর বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে সুবিধা হলো, সবচেয়ে কম পয়সা ও কম সময়ে ত্রিপুরায় আসা যায়। প্লেনের দরকার হয় না। বাস বা ট্রেনেই আরামে ঢাকা থেকে মাত্র তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টায় আসা যায়, যোগ করেন তিনি।
বাস সার্ভিস নিয়ে বলেন, ঢাকা টু আগরতলা সরাসরি বাস রয়েছে। এখন সপ্তাহে দুই দিন যায়। যাত্রী কম হয় বলে এখন দু’দিন যায়, বাড়লে সবদিন যাবে। সম্প্রতি আমরা আরও একটি বাস কিনেছি। চাহিদা তৈরি হলে কর্তৃপক্ষ গোটা সপ্তাহ চালাতে রাজি আছে।
ট্রেন নিয়ে দেন সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য, ঢাকা-ত্রিপুরা সরাসরি ট্রেনের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। অ্যাকুজিশন দুই দিক থেকেই হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী দুই বছরের মধ্যে চালু হয়ে যাবে।
আর ঢাকা-আখাউড়া ট্রেন যদি হয়, সেক্ষেত্রে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার জার্নি। আর সীমান্ত থেকে আগরতলা শহর মাত্র আধ ঘণ্টার পথ, বলেন তিনি।
‘আভ্যন্তরীণভাবে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। খুবই ভালো নেটওয়ার্ক রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এসএনএস