ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

রাজন্য রীতি মেনেই পূজা চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৭
রাজন্য রীতি মেনেই পূজা চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আগরতলা: প্রায় ৪শ বছরের পুরনো চতুর্দশ দেবতা মন্দির ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর একটি। বাইরের আবরণে কিছুটা পরিবর্তন এলেও মূল মন্দির রয়েছে আগের মোড়কে। রাজ্যের অন্যতম গুরুত্ব বহন করা এ মন্দিরে পূজা চলে আসছে সেই রাজন্য আমলের রীতি-নীতি মেনেই। পূজায় সাবেকিয়ানায় পরিবর্তন ঘটেনি বিন্দুমাত্র।

এ মন্দির কমপ্লেক্সে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় খার্চি পূজা। লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ হয় সাতদিনের সে ধর্মীয় উৎসবে।

খার্চি পূজার পুরহিতকে বলাহয় চন্তাই। তিনি আদিবাসী। বংশ পরম্পরায় নির্বাচিত হন একজন চন্তাই। তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি এই ১৪ জন দেবতাকে পূজা করার মন্ত্র জানেন। এই মন্ত্রের কোনো লিখিত রূপ নেই।  

চন্তাইয়ের স্মরণে থাকে মন্ত্র। তিনি বৃদ্ধ হয়ে গেলে তাদের বংশের একজনকে নির্বাচন করা হয় চন্তাই হিসেবে। চন্তাই নির্বাচনের সময় দেখা হয় কে মন্ত্র সঠিকভাবে মনে রাখতে পারবে ও সঠিকভাবে পূজার কাজ করতে পারবে। বাংলানিউজকে এমনটি জানান বর্তমান চন্তাই।  

চন্তাইকে সহযোগিতা করার জন্য আরও সহযোগী থাকেন বলেও জানান তিনি।

বর্তমান সরকার চন্তাইসহ রাজ্য সরকারের অধিকৃত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সব খরচের পাশাপাশি পূজার কাজে যুক্তদের সাম্মানিক ভাতা দিচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানান স্থানীয় বিধায়ক ও ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার পবিত্র কর। তিনি বলেন, চতুর্দশ দেবতা মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে রাজ্য আমলের দালান ও পুকুর। রাজ্য সরকারের তরফে এগুলি সংস্কার করা হয়েছে। পুকুরের পাড় পাকা করে বাঁধিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য বসার জায়গার ব্যবস্থা ও শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজন্য আমলের দালানকে সংস্কার করে তৈরি করা হয়েছে জাদুঘর।  

তিনি আরও বলেন, যেহেতু পুরনো আগরতলার চতুর্দশ দেবতা বাড়ি এলাকার আরও এক নাম পুরনো হাবেলি, তাই এ জাদুঘরের নাম দেওয়া হয়েছে হাবেলি জাদুঘর।

জাদুঘরটি ঘুরলে ত্রিপুরার রাজ্য আমলের শাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিচারব্যবস্থা, বিভিন্ন জাতির সামাজিক রীতি-নীতির ইতিহাস জানা যায়।  

১৭শ শতকের তৈরি চতুর্দশ দেবতার মন্দিরটি আজও অক্ষত। মূল মন্দিরটির যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য বাইরে নতুন করে আরও একটি মন্দির তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি মুক্তমঞ্চ। উৎসবের সময় সাত দিন ধরে দিনরাত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

পবিত্র কর আরও বলেন, এখন দিনের চেয়ে রাতে লোক সমাগম বেশি হয়। বিশেষ করে যুবকরা বেশি আসে। তারা সারাদিন কাজ শেষে বা সপ্তাহের শেষে শনিবার দেখে চলে আসে ও সারারাত উৎসব ও মেলা ঘুরে সকালে বাড়ি চলে যান।  

রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার পাশপাশি বাংলাদেশ থেকেও খার্চি পূজার মেলা ও উৎসবে যান অনেকে। জুলাই মাসের ১ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত চলা এ উৎসবে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতির এখনই সময়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬২৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৭
এসসিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।