ধনী, মধ্যবিত্ত ও গরিব সকলেই তার সাধ্যমতো নিজের আর্থিক অবস্থার মঙ্গল কামনায় ভক্তি ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করেছেন ত্রিপুরায়।
মূলত রাতে এই পূজার আয়োজন করা হয় ও গৃহস্ত্রী পূজা শেষে বিনিদ্র রজনী যাপন করেন।
পূজা শেষে বাড়ির গৃহস্ত্রীর রাত জেগে থাকা ও কোজাগরী শব্দ নিয়ে দুটি প্রচলিত লোকগাথা রয়েছে। কথিত আছে, লক্ষ্মী পূজার রাতে অন্যের বাড়ি থেকে ফলমূল, সবজি চুরি করে আনলে ধনদেবীর আশির্বাদ লাভ করা যায়। কেউ যাতে বাড়ির সামগ্রী চুরি না করতে পারে সেজন্য গৃহস্ত্রী রাত জেগে কাটান।
চুরি করতে আসা লোকজন বাড়ির বাইরে থেকে হাক দেন ‘কে জাগো রে’ বলে। আর এ থেকেই কোজাগরী শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে লোকগাথায় প্রচলিত আছে।
গ্রামাঞ্চলে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে এখনও অন্যের বাড়ি থেকে খাবার সামগ্রী চুরি করে আনার প্রথা থাকলেও, শহুরে সভ্যতা থেকে তা প্রায় উঠে যাচ্ছে।
এখন নব প্রজন্ম লক্ষ্মী পূজায় রঙিন আতশবাজি পুড়াতে ব্যস্ত। আতশবাজির সঙ্গে গত বছর থেকে যোগ হয়েছে চীন থেকে আমদানি করা আকাশ বাতি।
যা আগে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধদেবের জন্ম জয়ন্তীতে নিজ হাতে তৈরি ‘ফানুস’ ওড়াতেন।
এখন চীনা বাজার অর্থনীতির কল্যাণে রেডিমেড প্যাকেট জাত অবস্থায় পাওয়া যায় শহর থেকে গ্রামের বাজারে। শুধু প্যাকেট থেকে খুলে আগুন ধরিয়ে দিলেই হল সটান আকাশে।
তাই এ বছর কোজাগরীর সন্ধ্যা নামতেই ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার আকাশ আতশবাজির পাশাপাশি লাল, সাদা, সবুজ, হলুদ সহ নানা রঙ্গের চীনা আকাশ বাতিতে ছেয়ে যায়।
অনেক সংস্থা আবার এই চীনা সামগ্রীর মতো বাজি ও বাতি বর্জনের আহ্বান রেখেছেন। উৎসবের আমেজে অধিকাংশ মানুষ এই আহ্বান ভুলে মাতেন আনন্দে। তাই তো এদিন সন্ধ্যার পর থেকে আগরতলাসহ রাজ্যের আকাশ সেজে উঠে রঙিন আলোকে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৭
এসসিএন/এমএ