বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’ দেখে এমনটাই বলছিলেন দমদম থেকে আসা এক প্রৌঢ় নিমাই দে।
শুধু তিনি কেন? সোমবার (৮ জানুয়ারি) কর্মব্যস্ত দিনে কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে যেমন উপচে পরা মানুষের সমাগম হয়েছিল, তাতে গর্বে দু’ইঞ্চি বুক ফুলাতেই পারেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।
কারণ তারাই ছিলেন ৪ দিনব্যাপী উৎসবের মূল আয়োজক। দর্শক আসন ভর্তি, তাতে কী? দাঁড়ানোর তো জায়গা আছে! দাঁড়িয়েই দেখছেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গেলো-রীতিমত বন্ধ দরজা ফাঁক করে চললো সিনেমা দেখা।
কর্তৃপক্ষও চুপ, কারণ একটাই আবেগ! ‘থাক আজই তো শেষ দিন। আমার বাড়িও বরিশালে ছিলো,’ বলে চললেন রতন সাহা। শেষ কবে এ রকম উৎসাহ দেখেছেন? উত্তরে বললেন, ‘শেষ কবে এমন সিনেমা হয়েছে, বলুন?’
তবে জানালেন, তার খুব ইচ্ছে ছিল চলচ্চিত্রের নায়িকা জয়া আহসানের সঙ্গে ছবি তোলার। তা আর হলো না, কারণ তিনি আসেননি।
কলকাতায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে’র আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন। সোমবার ছিল এর শেষদিন।
এর আগে কোনো দেশ এককভাবে ভারতে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবটি কলকাতাবাসীর কাছে নিঃসন্দেহে এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে-তা বলাই চলে।
গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) নন্দন-২ প্রেক্ষাগৃহে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় ও দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রী ইনু তখনই বলেছিলেন, প্রথমবার কলকাতা দিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনা করলাম। এতে আমরা সাফল্য অর্জন করবোই। আগামী বছর থেকে ভারতের অন্যান্য প্রদেশেও করা হবে।
‘একই সঙ্গে আগামী দুইমাসের মধ্যে ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসব করবো বাংলাদেশে। যা চলবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। ’
চারদিনের চলচ্চিত্র উৎসবে উদ্বোধনী দেখানো হয়েছিল ২০১৫ সালের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ‘বাপজানের বাইস্কোপ’। দেখানো হয় ‘গেরিলা’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, ‘অনিল বাগচীর একদিন’, ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’, ‘টেলিভিশন’, ‘গাড়িওয়ালা’, ‘জন্মসাথী’, ‘শোভনের স্বাধীনতা’ ছাড়াও আরও কয়েকটি ছবি। পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্রীরও প্রদর্শনী চলে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
ভিএস/এমএ