ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

বেওয়ারিশ প্রাণীর সেবায় ‘পশম’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
বেওয়ারিশ প্রাণীর সেবায় ‘পশম’ কুকুরের ক্ষতে পরম স্নেহে ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছেন অনুমিতা পাল। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা: বাড়ির গৃহপালিত প্রাণী বিশেষদ কুকুর-বিড়ালের খাবার-দাবারের অভাব সাধরণত হয় না। এমনকি অসুস্থতা কিংবা শারীরিক কোনো সমস্যা হলে তাদেরে মালিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন। কিন্তু শহরের রাস্তায় ঘুরে-বেড়ানো বেওয়ারিশ প্রাণীদের নিয়মিত খাবার জোটে না। এসব প্রাণীর রোগ-বালাই হলে চিকিৎসা তো দূর অস্ত।

অনেক সময় রাস্তার বেওয়ারিশ প্রাণীগুলিকে রোগ-বালাইসহ নানা দুর্ঘটনার যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাতে দেখা যায়। আবার অনেক সময় চিকিৎসা ছাড়াই অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে প্রাণীগুণি।

এ চিত্র প্রায় প্রতিটি দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশের ছোট-বড় শহরেই দেখা যায়।

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলাসহ ছোট-বড় শহর ও শহরতলীতে দেখতে পাওয়া যায় এমন সকল প্রাণী। রাস্তার এই বেওয়ারিশ জীবগুলির সহায়তায় এগিয়ে এসেছে ‘পশম’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তরুণ প্রজন্মের ১৫ জন ছেলে-মেয়ে মিলে তৈরি করেছেন সংস্থাটি। তারা প্রতি সপ্তাহে আগরতলা শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কুকুর ও বেড়ালদের মাংস-ভাত খাওয়ান।

সপ্তাহে দুদিন ২০ কেজি ভাত ও ১০ কেজি মুরগির মাংস প্রাণীগুলোর জন্য সংগ্রহ করে সংস্থাটি। গত এক বছর ধরে তারা এই সেবামূলক কাজ করে আসছেন বলে বাংলানিউজকে জানান সংস্থার সদস্য অনুমিতা পাল।

রাজধানীর জয়নগরের দশমীঘাট এলাকার একটি রাস্তায় কুকুরের ক্ষতে পরম স্নেহে ওষুধ লাগিয়ে দেওয়ার সময় বাংলানিউজের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় অনুমিতার। তিনি জানান- তাদের ইচ্ছে আছে সপ্তাহে দুই দিন খাওয়ানোর বন্দোবস্ত আরো বাড়ানোর। তাদের এই কাজে ১৫ জন সদস্যের পাশাপাশি আরও ১৭ জন স্বেচ্ছাসেবী সহায়তা করছেন বলেও জানান অনুমিতা।

শুধু পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের মধ্যেই পশম’র কাজ সীমাবদ্ধ নয়, যেসব প্রাণী অসুস্থতায় ভুগছে বা দুর্ঘটনার শিকার প্রাণীদের নিয়মিত চিকিৎসার ব্যবস্থাও তারা করে থাকেন বলে জানান অনুমিতা পাল। এখন পর্যন্ত তারা শতাধিক কুকুরের চিকিৎসা করেছেন। এখনও প্রায় ৫০টির মতো আহত কুকুরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে পশম।

এ কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন কীভাবে? জানতে চাইলে বাংলানিউজকে অনুমিতা জানান, সংস্থার সদস্যরা নিজেদের পকেটের অর্থ দিয়ে এই কাজ চালাচ্ছেন। তাছাড়া প্রাণীদের চিকিৎসা করার সময় বা খাবার দেওয়ার সময় এলাকার অনেক সহৃদয় মানুষ স্বেচ্ছায় তাদের আর্থিক সহায়তা করলে তারা সানন্দে তা নিচ্ছেন। আপাতত এভাবেই চলছে তাদের সেবামূলক কাজ। তবে একাজের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি বলেও জানান অনুমিতা।

কুকুর-বিড়ালের পাশাপাশি রাস্তার গরুর চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ প্রাণীগুলির জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে সেবা সংস্থা পশম’র। জন্ম নিয়ন্ত্রণের কাজের জন্য সরকারি অনুমোদন ও প্রাণীগুলিকে রাখার জন্য স্থায়ী শেডের প্রয়োজন হয়। সরকারি অনুমোদন ইতিমধ্যে পেয়েছেন এখন শেডের বন্দোবস্ত হলে এই কাজ করতে পারবে পশম।

বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
এসসিএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।