গাছগুলো তখন জীর্ণকায়া রূপ নিয়ে আকাশ পানে চেয়ে থাকে। কবে বৃষ্টি হবে, কবে গোটা জঙ্গলকে ভিজিয়ে দেবে।
এই ঋতুরেই পলাশ, শিমুল, মান্দার গাছগুলো ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যায়। নেড়া গাছগুলো আগুন রঙা ফুলে ফুলে ছেয়ে থাকে। আর এই ফুলগুলো থেকে মধু সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত থাকে মৌমাছির দল। মৌমাছিরা দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের রেণু সংগ্রহ। আম, লিচুসহ গোলাপ জাম ও জামরুল গাছে মুকুল আসে। ঋতুচক্রের নিয়মে এবারও আগরতলাসহ ত্রিপুরার এসব ফলের গাছগুলোতে আম, লিচু ইত্যাদি ফলের মুকুল এসেছে। মাঘ মাস থেকে এসব ফলের গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করলেও এবার রাজধানী আগরতলার আমগাছগুলোতে খানিকটা পরে মুকুল এসেছে বলে জানিয়েছে রাজধানীবাসীরা। তাই এখন আম- লিচুর গাছে মুকুল দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানী আগরতলার ডিমসাগর লেকের ধারে আমের মুকুলের ছবি তোলার সময় গাছের মালিক প্রবীর দেববর্মা দেরিতে মুকুল আসার কথা জানান। তবে এবার গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে বলেও জানান তিনি।
প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে যে বছর আমের মুকুল বেশি আসে সে বছর নাকি ঝড়-বৃষ্টি বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদিও এখনো এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে যুগ যুগ ধরে এই প্রবাদ চলে আসছে। আগে আগরতলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পলাশ, শিমুল গাছ দেখা যেতো লাল ফুল, বসন্ত এলে কোকিলের কুহু কুহু ডাক শোনা যেতো এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়েনা বলেও জানান ডিমসাগর লেকের ধারে প্রাতঃভ্রমন করতে আসা ষাটোর্ধ অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী বেনু গোপাল দেব। আক্ষেপের সঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তাই এখন কখন বসন্ত আসে ও চলে যায় তা বোঝাই যায় না। রাজধানীর কর্নেল চৌমুহনী থেকে শঙ্কর চৌমুহনীর মধ্যে রাস্তার পাশে এখনো তিনটি পলাশ গাছ রয়েছে। শহরের দূষণ ও ধুলাময়লার সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে গাছগুলো। এর মধ্যে একটিতে এবছর গুটিকতক ফুল ফুটলেও বাকি দু’টি গাছ নিজের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে গিয়ে শহরবাসীকে ফুল উপহার দিতে পারেনি। নানা প্রতিকূলতার পরও প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে এখনো নিয়ে আসে ঋতুরাজ বসন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮
এসসিএন/এএটি