গ্রামের পাকা সড়ক ধরে সামনে গেলে সমতল জমিতে যেমন ধানসহ অন্যান্য সবজির খেত চোখে পড়ে তেমনি চোখ পড়ে কমলা ও হলুদ রঙের গাঁদা ফুলের বাগান।
গ্রামের যত ভেতরের দিকে ঢোকা যায় ততই গাঁদা ফুলের বাগান আরও বেশি চোখে পড়ে।
লক্ষ্মীবিল এলাকার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের প্রধান পেশা হচ্ছে ফুল চাষ। রাজ্যের অন্যান্য এলাকাতে ফুল চাষ হলেও তবে তা তুলনামূলক-ভাবে অনেক কম।
লক্ষ্মীবিলের রাখী দাস চৌধুরী নামে এক ফুল চাষি বাংলানিউজকে জানান, ফুল চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ত্রিপুরা রাজ্যে ফুল সংরক্ষণ করার মতো কোনো হিমাগার নেই। তাই তোলা ফুল বিক্রি না হলে নষ্ট হয়ে যায়। আবার বৃষ্টির কারণে অনেক সময় ফুল পচে নষ্ট হয়।
তিনি আরও বলেন, তার পরিবারের ফুল চাষই এখন প্রধান পেশা। গত ১৯ বছর ধরে তারা ফুল চাষ করছেন। এ বছর তারা প্রায় এক বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ করেছেন। তাছাড়া অল্প জমিতে গ্রেডুলাক্স ফুল ও অন্যান্য সবজি চাষ করেছেন।
গাঁদা ফুল বেশি পরিমাণে চাষ করার কারণ হিসেবে তিনি জানান, সারা বছর ধরে এ ফুল চাষ হয়। এখানে অনেকে এ ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত। তবে শীতকালে গাঁদা ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির ফুলও চাষ করা হয়।
ফুল চাষে লাভ নিয়ে রাখী বলেন, বাজারের চাহিদা যখন বেশি থাকলে ফুল উৎপাদন করতে পারলে বেশ লাভ হয়।
ভারতের অন্যান্য রাজে ফুল থেকে আবিরসহ নানান রঙ-বেরঙের খাবার জন্য রঙ তৈরি করা হয়। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্য ফুল থেকে আবির বা রং তৈরির কোনো কারখানা নেই। যদি থাকতো তবে ফুল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি পাশাপাশি কারখানাতেও বিক্রি করা যেতো। এতে একটি ফুলও নষ্ট হতো না। কিন্তু এখনো ত্রিপুরা রাজ্যে এমন কারখানা স্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেই বলেও জানান রাখী।
আরেক ফুল চাষি প্রদীপ দেবনাথ বলেন, ফুল চাষের জন্য ৭ বিঘা জমি ব্যবহার করছি। এর মধ্যে ৫ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করছি আর দু’বিঘা জমিতে নার্সারি করেছি। এ দু’বিঘা জমিতে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্র মল্লিকা, বেঞ্জি, ডায়ানতাস, গাঁদাসহ আরও অনেক জাতের ফুলের চাষ করছি।
ফুল ব্যবসার লাভ নিয়ে তিনি বলেন, বিয়েসহ নানা উৎসবে ফুলের প্রয়োজন হয়। এ উৎসবের দিন গুলোতে ফুল তোলতে পারলে লাভ ভালই থাকে।
চিত্তরঞ্জন নাথ নামের আরেক ফুল চাষি জানান, ফুল চাষ করে বেশ ভালোই আছেন, এ বছর তিনি ৭ কাটা জমিতে গাঁদা ফুল চাষ করেছেন। ফুল চাষ এ এলাকার অনেক মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৮
এসসিএন/এপি