ত্রিপুরার ধলাই জেলার কমলপুর ও খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া এলাকাসহ পুরো রাজ্যেই বিপুল পরিমান লেবু চাষ হয়। এসব এলাকার মাটি লেবু চাষের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় কোনো ধরনের যত্ন ছাড়াই বিপুল পরিমান লেবুর ফলন হয়।
ত্রিপুরা সরকারের কৃষি দফতরের প্রচেষ্টায় এ বছরই প্রথম রাজ্যের বাইরেও লেবু রফতানি করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান কমলপুর এলাকার স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্য সরকারের ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব।
তিনি আরও জানান, যেখানে চাষিরা একটি লেবু ২০ পয়সা দরেও বিক্রি করতে পারেন না, সেখানে এ বছর কৃষি দফতরের সহায়তায় ৮০ পয়সা দরে এক একটি লেবু কিনে নিয়ে গেছে রাজধানী দিল্লির একটি ফল প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা। তারা এই লেবু থেকে পানীয় তৈরি করবে। রাজ্য সরকারের এ উদ্যোগে এই এলাকার লেবু চাষিরা খুশি। তারা চাইছে আরও বেশি করে লেবু রফতানি হোক।
মন্ত্রী বলেন, কমলপুর এলাকায় একটি লেবু প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এ জন্য জায়গাও দেখে রাখা হয়েছে। এখন শুধু বেসরকারি শিল্প উদ্যোগী খোঁজার কাজ চলছে। যারা লেবুকে প্রক্রিয়া করে পানীয় ও আচার জাতীয় সামগ্রী তৈরি করতে পারবে। এতে একদিকে যেমনি রাজ্যের উৎপাদিত লেবু কাজ লাগবে, অন্যদিকে তেমনি কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
কমলপুরের লেবু প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপনের খবর ইতোমধ্যেই স্থানীয় এলাকার চাষীদের মধ্যে পৌঁছেছে। আমবাসা এলাকার এক লেবু চাষি বাংলানিউজকে জানান, সরকার যদি সত্যিই এ উদ্যোগ নেয়, তবে চাষিরা লাভবান হবেন। তাদের লেবু আর পঁচে নষ্ট হবে না। আরও বেশি করে লেবু বাগান তৈরি করতে পারবেন। এতে চাষিরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি বাগানে কাজ করার মধ্য দিয়ে অন্য মানুষেরও কর্মসংস্থান হবে।
উমা পাল নামে এক লেবু চাষি বাংলানিউজকে জানান, তার বাগানে মোট ১০০টি লেবু গাছ রয়েছে। গত ১০ বছর ধরে তার পরিবার লেবু চাষের সঙ্গে যুক্ত। যদি কারখানা হয় তবে লেবুর চাহিদা বাড়বে। তারাও তাদের বাগান আরও বড় করবেন।
বিমল শর্মা নামে আরেক চাষি বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছর তার বাগানে যে পরিমান লেবুর ফলন হয়, তা বিক্রি করলে ৫০ থেকে ৬০ হাজার রুপি আয় হতো। কিন্তু বছরে ১০ থেকে ২০ হাজার রুপির বেশি লেবু বিক্রি হচ্ছে না। তাই দ্রুতই সেখানে লেবুভিত্তিক কারখানা গড়ে উঠুক- এমনটাই চাইছেন তিনি।
সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের এই পরিকল্পনায় নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন ত্রিপুরার লেবু চাষিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৯
এসসিএন/এসএ