মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ত্রিপুরার ধলাই জেলার চান্দ্রাইপাড়া স্কুল মাঠে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে সংগঠনটির নেতা সাবির দেববর্মা এবং প্রচার সচিব কাজল দেববর্মাসহ মোট ৮৮ জন আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে তিনজন নারী সদস্যও ছিলেন।
এ সময় এনএলএফটির সদস্যদের জনজাতিদের চিরাচরিত সম্মাননার কাপড় রিশা পরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে স্বাগত জানান ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ঞু দেববর্মা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার সংসদ সদস্য রেবতী কুমার ত্রিপুরা, রাজ্যের অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের সচিব কুমার আলোক, ত্রিপুরা পুলিশের এডিজি তথা আইন-শৃঙ্খলা শাখার আইজি রাজীব সিং প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বলেন, ২০১৪ সালে ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার গঠন করার পর দেশের টানা ৪২ বছর ধরে চলা নাগ্যাল্যান্ডের উগ্রবাদী সমস্যার সমাধান করেন। পাশাপাশি তিনি উত্তরপূর্বের অন্যান্য রাজ্যের উগ্রবাদীদের স্বাভাবিক জীবনে আসার আহ্বান জানান। একই ভাবে এবার কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দিয়ে তিনি আবার নতুন এক চ্যালেঞ্জকে সফল ভাবে সমাধান করেছেন। ত্রিপুরার নতুন সরকার রাজ্যের জনজাতি অংশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। এ উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভারত সরকার ত্রিপুরার জন্য দু’টি ইন্ডিয়ার রিজার্ভ ব্যাটালিয়ান তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। এতে রাজ্যের জনজাতি অংশের যুবকরা চাকরি পাবে। এছাড়া যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন তারাও সুযোগ পাবে। ৮৮ জন জঙ্গি সদস্য একটি বিশেষ মুহূর্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন যখন সরকার ত্রিপুরাকে শ্রেষ্ঠ রাজ্য তৈরির জন্য কাজ করছে। যা ত্রিপুরার শেষ রাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের স্বপ্ন ছিল।
জঙ্গিদের জমা দেওয়া অস্ত্র গুলোর মধ্যে ছিল একে ৪৭, পিস্তল থ্রি নাট থ্রি, বন্দুকের গুলি ও অস্ত্র এবং ওয়াকিটকি।
দিল্লিতে এনএলএফটি-এসডির সদস্যদের আত্মসমর্পণ সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১০ আগস্ট ভারত সরকার, ত্রিপুরা সরকার এবং আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে চুক্তি হয়। পরে মঙ্গলবার তারা আত্মসমর্পণ করে।
আত্মসমর্পণের পর সাবির দেববর্মা সংবাদ মাধ্যমে কোনো কথা বলেননি, তিনি পরে আত্মসমর্পণের বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে আত্মসমর্পণের পর কাজল দেববর্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর তাদের স্বাভাবিক জীবনে আসার জন্য যে আহ্বান জানিয়ে ছিলেন তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। আত্মসমর্পণের জন্য তাদের কোনো আর্থিক সাহায্যে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সরকার তাদের পরিবারসহ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আত্মসমর্পণের পর এনএলএফটি-এসডির সদস্যদের ধলাই জেলার শিকারিবাড়ী এলাকার পুর্নবাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য ট্রেনিং দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
এসসিএন/আরআইএস/