আগরতলা(ত্রিপুরা): ইন্টারনেট দেখে বর্ষাকালে তরমুজ চাষ করে সবাইকে অবাক করে দিলেন ত্রিপুরার এক যুবক কৃষক। তার এই সাফল্যের খবর শুনে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজে ছুটে গেলেন তার বাগানে।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ৪৫কিমি দূরে পশ্চিম জেলার অন্তর্গত একটি অজপাড়া গ্রাম হচ্ছে মতাই। এই অখ্যাত গ্রাম এখন প্রচারের আলোকে এক উদ্যোমী যুবক চাষি ভবেন্দ্র দেবনাথ'র জন্য।
ত্রিপুরা রাজ্যের আবহাওয়ায় মূলত শীতের শেষ লগ্নে এবং বসন্তকালে তরমুজ চাষ হয়ে থাকে, কিন্তু ভবেন্দ্র দেবনাথ ভরা বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষ করে সবার নজর কেড়েছে। গত দু'বছর ধরে সেই তরমুজ চাষ করছে। তরমুজের বাম্পার ফলন হচ্ছে তার খেতে। তার এই সাফল্যের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজেই ছুটে যান মতাই গ্রামে, ঘুরে দেখেন ভবেন্দ্র'র তরমুজের বাগান।
ভবেন্দ্র জানায় সে ইন্টারনেটে ভিডিও দেখে অসময়ে তরমুজ চাষের অনুপ্রেরণা পেয়েছে। তাছাড়া সে কৃষক পরিবারের ছেলে তাই তারমধ্যে চাষবাসের আগ্রহ এবং জ্ঞান রয়েছে। সে যে পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করছে তার নাম মালচিং পদ্ধতি। ত্রিপুরা রাজ্যে যেসকল তরমুজ চাষ হয়ে থাকে এগুলো মূলত মাটিতে ধরে থাকে। কিন্তু তার এই তরমুজ গুলি মাথার মধ্যে চাষ হচ্ছে। একেকটি তরমুজের ওজন ৪থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই এগুলিকে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় মাচার সঙ্গে যাতে করে তরমুজ গাছের লতা থেকে ছিড়ে না পড়ে যায়। এই পদ্ধতিতে চাষের খরচ কেমন লাভই বা কেমন থাকে? এর উত্তরে সে জানায় এই সময় খোলাবাজারে প্রতি কেজি তরমুজ ৮০থেকে ৯০ রুপি করে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সে পাইকারি দরে ৫০থেকে ৬০রুপি করে যদি বিক্রি করে তারপরও প্রচুর পরিমাণে লাভ থাকে।
শুধু সে একাই নয় তাকে দেখে কোন তার গ্রামের আরো বেশ কয়েকজন চাষি মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন। সে এই সকল চাষিদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও জানায়।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে তার বাগান পরিদর্শন গিয়েছেন কেমন অনুভূতি? এর উত্তরে সে জানায় তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছে না। তার মত একজন সাধারণ চাষির বাগানে মুখ্যমন্ত্রীর মত একজন ভিআইপি মানুষ ছুটে আসবেন তা কল্পনাও করতে পারেনি কোনদিন, এই ভেবে খুব ভালো লাগছে।
তরমুজ বাগান পরিদর্শন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন ভারতের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে কৃষি। তাই কৃষকদেরকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমান ভারত সরকার এবং ত্রিপুরা সরকার কৃষিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। ভবেন্দ্র'র মত অন্যরাও যদি এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে ত্রিপুরা রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার বুনিয়াদ আরো মজবুত হবে তা খুব সহজে বোঝা যায়। এমন আগ্রহী কৃষকদেরকে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘন্টা, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
এসসিএনএ/এমএমএস