আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারতের অন্যান্য রাজ্যসহ বিদেশে দিন দিন ত্রিপুরা রাজ্যের আনারসের চাহিদা বাড়ছে। এজন্য ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দফতরের অধীনস্ত উদ্যান এবং ভূমি সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজ্যে নতুন করে আরও ১ হাজার হেক্টর জমিতে আনারস বাগান করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
সরকারী হিসেবে রাজ্যে বর্তমানে ৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আনারস বাগান রয়েছে। রাজ্যে ধলাই জেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আনারস বাগান রয়েছে। এই জেলাতে ৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আনারস বাগান আছে। গড়ে রাজ্যে প্রতি হেক্টরে বছরে ১৫ মেট্রিকটন আনারস উৎপাদন হয়।
রাজ্য থেকে প্রতিবছর আনারস ভারতের অন্য রাজ্যে রপ্তানি হচ্ছে। তবে সম্প্রতি উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তৎপরতায় অনেক বেশি পরিমাণে আনারস রপ্তানি হচ্ছে। এমনকি এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত রাজ্যের আনারসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ২ হাজার ৮৩ মেট্রিকটন আনারস রপ্তানি হয়েছে। রাজ্যে মূলত দুই প্রজাতির আনারস উৎপাদন হয়। এগুলো হলো ক্যুইন এবং কিউ প্রজাতির আনারস। তবে ক্যুইন প্রজাতির আনারস সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু। উভয় প্রজাতির আনারসই রপ্তানি হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ১০ মেট্রিকটন আনারস দুবাইতে রপ্তানি হয়েছে এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে দুবাইতে রপ্তানি হয়েছে ১০ মেট্রিকটন। এরমধ্যে ৩ মেট্রিকটন ক্যুইন প্রজাতির এবং বাকিগুলো কিউই প্রজাতির আনারস। এ বছর চাষিরা প্রতিটি কিউ প্রজাতির আনারস প্রতিটি গড়ে ১২ থেকে ১৪ রুপি করে পেয়েছেন এবং ক্যুইন প্রজাতির আনারস প্রতিটি গড়ে ২২ থেকে ২৩ রুপি করে বিক্রি করেছেন।
রাজ্যের আনারস চাষিদের আর্থিক সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। তাই এখন আনারস নিয়ে চাষিরা কোন সমস্যায় নেই।
ক্যুইন প্রজাতির আনারস ত্রিপুরা রাজ্যের বিশেষ প্রজাতির ফল হিসেবে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন ট্যাগ পেয়েছে। এই প্রজাতির আনারস খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। এতে পিএইচ স্তর ৪ থেকে ৪ দশমিক ৫ এবং জলীয় মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ রয়েছে। এই প্রজাতির একটি আনারসের ওজন ৬শ' গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। অপরদিকে, কিউ প্রজাতির একটি আনারসের ওজন দেড় থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
এসসিএন/এমআরএ