ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

প্লাস্টিকমুক্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ত্রিপুরার রৌয়া অভয়ারণ্য 

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
প্লাস্টিকমুক্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ত্রিপুরার রৌয়া অভয়ারণ্য 

আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর জেলার জেলা সদর ধর্মনগর শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে রৌয়া এলাকায় রয়েছে রৌয়া অভয়ারণ্য। আট নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে ৪৩ হেক্টর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে এটি।

অভয়রণ্যের ভেতরে প্লাস্টিকের বোতলসহ প্লাস্টিকের প্যাকেটের দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অভিনব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যদি প্লাস্টিকের বোতল বা প্যাকেট সঙ্গে নিয়ে অভয়রণ্যের ভেতর ঢুকে তবে তার কাছ থেকে ১০০ রুপি রাখা হয় এবং টিকিটের গায়ে তা লিখে দেওয়া হয়। অভয়ারণ্য থেকে বের হয়ে আসার পথে বোতল বা প্যাকেট দেখালে এই ১০০ রুপি ফেরত দেওয়া হয় আর না দেখাতে পারলে বুঝতে পারেন যে বোতল বা প্যাকেট ভেতরে ফেলে দেওয়া হয়েছে তখন তা পরিষ্কার করার জন্য ১০০ রুপি জরিমানা হিসেবে কেটে রাখা হয়। তাই অভয়রণ্যের ভেতরে প্লাস্টিকের বোতলসহ আবর্জনা নেই বললেই চলে। এই অভয়রণ্যের মধ্যে রয়েছে বিশাল প্রাকৃতিক জলাশয়। এর চারপাশে ঘন সবুজের ঘেরা অভয়রণ্য। শীতকালে এই জলাশয়ে পরিযায়ী পাখী ভিড় জমায়। জলাশয়ের চারপাশে পর্যটকদের হাঁটার জন্য বন দপ্তর পাকা রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। অভয়ারণ্যে সেগুন, গামাই, কড়ই, আগর, গর্জন, চাম্পা, নাগেশ্বর, নানা জাতে মূল্যবান গাছ, লতা গুল্ম, বেত গাছ, ঔষধি গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। গুল্মের মধ্যে ছাতা পাতা, তিত্তাপাত্তি ইত্যাদি। এছাড়া রয়েছে নানা প্রজাতির বাঁশ। ছাতা পাতা হচ্ছে এক ধরনের পাতা, যা দিয়ে এক সময় বাঁশের ছাতা তৈরি করা হতো। এই ছাতা মাথায় দিয়ে কৃষক রোদ, বৃষ্টিতে মাঠে কাজ করতেন। কিন্তু এখনো কৃষকরা বাঁশের তৈরি ছাতা মাথায় দিয়ে মাঠে কাজ করেন কিন্তু এখন এই পাতা না পাওয়া বাঁশ শিল্পীরা এই পাতার বদলে পলিথিন ব্যবহার করছেন। তেমনি তিত্তাপাত্তি তথা বাঙ্গুই পাতা হচ্ছে জনজাতিদের চিরাচরিত বিন্নি চাল দিয়ে বিশেষ ধরনের খারার বাঙ্গুই তৈরি করার অন্যতম একটি উপকরণ। এছাড়া অভয়রণ্যের ভেতর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রঙ-বেরঙের প্রজাপতি, পাঁচ থেকে সাতটি হরিণ এবং চশমা বানর। তবে এই প্রাণীগুলি জঙ্গলের গভীরে থাকে তাই খুব বেশি দেখা যায় না। ভোরে এবং সন্ধ্যা নাগাদ মাঝে মধ্যে হরিণগুলিকে দেখা যায় বলে জানান নন্দদোলাল দাস। তিনি আরও জানান, এখানের আসা পর্যটকদের সুবিধা কথা চিন্তা করে এখানে একটি ট্রি হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। এর নিচের কাঠামো পাকা হলেও উপরের ঘর সম্পূর্ণ ভাবে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হবে। জলাশয়ে সম্প্রতি দুটি প্যাডেল নৌকা আনা হয়েছে। তবে পানি কম থাকায় তা এখন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বৃষ্টির পানিতে জলাশয় ভর্তি হলে নৌকাগুলি চলানো সম্ভব হবে। এছাড়া একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে এখানে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
এসসিএন/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।