ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাড়ছে নদ-নদীর পানি, এ মাসে বন্যার শঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৮
বাড়ছে নদ-নদীর পানি, এ মাসে বন্যার শঙ্কা সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তারই ফাইল ছবি

ঢাকা: চীনের পর ভারতে বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে ভাটির দেশ বাংলাদেশেও চলতি সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয়ার্ধে বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
 

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর এই বন্যাকে ‘স্বল্প মেয়াদে’ বললেও চীনের স্যাংপো নদীর পানি ভারতের ব্রহ্মপুত্র নদে ছেড়ে দেওয়ায় সিয়াং নদী এলাকার অরুণাচল প্রদেশের তিনটি জেলা ও ব্রহ্মপুত্রের ভাটির রাজ্য আসামে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই বন্যা বাংলাদেশেও আশঙ্কা জাগিয়েছে।


 
চীন সরকার বলছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে স্যাংপো নদী পানিতে ফুলে-ফেটে উঠছে। এক পর্যায়ে গত ৫০ বছরের ইতিহাসের সর্বোচ্চ পানি হয় নদীটিতে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে পারে এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
আবহাওয়া অধিদফতর দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ কমিটির নিয়মিত সভা সোমবার (০৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
 
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, সেপ্টেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ১-২টি মৌসুমি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
 
আর নদ-নদীর অবস্থায় বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে শেষ পর্যন্ত দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদি বন্যা হতে পারে।
 
বৈঠকে আগস্টের সংঘটিত আবহাওয়ার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে বলা হয়, আগস্টে স্বাভাবিক ৪০২ মিলমিটারের স্থলে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫৬ দশমিক ১ মিলিমিটার। অর্থাৎ ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। তবে স্বাভাবিক ২২ দিন বৃষ্টিপাতের সংখ্যার স্থলে ৩১ দিনই বৃষ্টি হয়।
 
আর ১৮-১৯ আগস্ট সিলেট, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ১৯ আগস্ট দিনাজপুরে সর্বোচ্চ ৩৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
 
বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সব নদ-নদীর পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পাঁচটি নদ-নদীর পানি ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে।  
 
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনার পানি সমতলে স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মার পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
 
সেপ্টেম্বরের ১০ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা এবং ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে। আর গঙ্গা-পদ্মার অববাহিকার পানি সমতলে স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে পূর্বাভাসে বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই।  
 
এদিকে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বাংলাদেশে গত দু’দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অর্থাৎ দুই দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।