কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমার মেয়ের বেওয়ারিশ লাশ হাসপাতালে ফেলে গেছে স্কুলের আয়া। মূলত আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার স্কুলের পরিচালক আবু তাহা সাদী।
নিজের মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া আনুশকা আয়াত বন্ধনের (১৪) মৃত্যু নিয়ে এভাবেই বলছিলেন হতভাগ্য বাবা আনোয়ার জাহিদ।
রোববার (০৭ জুলাই) দুপুরে বাংলানিউজের সঙ্গে যখন তার কথা হয় তখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিহত আনুশকার মরদেহের ময়নাতদন্ত চলছিল।
শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলা সদরের পূর্বছনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার জাহিদ বাবু। তার মেয়ে আনুশকা শেরপুর সদরের ফৌজিয়া মতিন পাবলিক স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চতুর্থ শ্রেণিতে এ স্কুলে তাকে ভর্তি করানো হয়।
এ স্কুলের ছাত্রীনিবাসের দু’তলার একটি কক্ষে শেরপুর সরকারি কলেজের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্রী রিয়ার সঙ্গে থাকতো আনুশকা। মেয়েটির বাবা আনোয়ার জাহিদ বাবু বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছাত্রীনিবাস হওয়ায় সেখানে পরিচালক আবু তাহা সাদী ছাড়া আর কেউ যেতে পারতেন না। শনিবার (০৬ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে আমার স্ত্রী সাদীর ফোন থেকে আনুশকার সঙ্গে কথা বলেন। ’
‘প্রায় ৫ মিনিট মা-মেয়ের কথা হয়। কথা বলার সময় আমার মেয়ে খুবই স্বাভাবিক ছিল। তবে ওই সময় ছাত্রীনিবাসে আর কেউ ছিলেন না। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সময়ই আমার মেয়েকে একা পেয়ে আবু তাহা সাদী ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত থাকলে আমি তারও কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ’
তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- স্কুল থেকে একজন আয়া দিয়ে আমার মেয়ের মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর ওই আয়াও সেখানে ছিল না। উপস্থিত চিকিৎসক ও পুলিশ সবারই সন্দেহ ধর্ষণের পর আমার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এ ঘটনায় শনিবার (০৬ জুলাই) রাতেই আবু তাহা সাদী, তার স্ত্রী নাজনীন মোস্তারি নূপুর ও সাদীর ভাই শিবলীকে আটক করা হয়েছে।
‘তবে কেন এবং কী কারণে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। মরদেহের ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৯
এমএএএম/এমএ