ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দায়সারা মেরামত

উধাও কার্পেটিং, নেই রোড মার্কিং, সড়কে পটহোল

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৬
উধাও কার্পেটিং, নেই রোড মার্কিং, সড়কে পটহোল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অতিরিক্ত সময় ও অর্থের অপচয় করে ঢাকা-টাঙ্গাইল জাতীয় মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে দায়সারা মেরামত করা হয়েছে। মেরামতের কিছুদিন পরই বৃষ্টিতে সড়কের কার্পেটিং উঠে তৈরি হয়েছে বড় বড় পটহোল।

ঢাকা: অতিরিক্ত সময় ও অর্থের অপচয় করে ঢাকা-টাঙ্গাইল জাতীয় মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে দায়সারা মেরামত করা হয়েছে। মেরামতের কিছুদিন পরই বৃষ্টিতে সড়কের কার্পেটিং উঠে তৈরি হয়েছে বড় বড় পটহোল।

ফলে প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মেইনটেন্যান্সের আওতায় কার্পেটিং সংস্কারে নতুন কাজ হাতে নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন বিভাগের(আইএমইডি) প্রকল্প সমাপ্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্কার ও মেরামত করা ২৭ কিলোমিটার সড়কের অনেক স্থানে খানা-খন্দ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বাজার অংশের রাস্তা ভেঙে বড় আকারের পটহোল তৈরি হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত ‘মির্জাপুর(গড়াই)-সখিপুর মহাসড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন আইএমইডি’র সহকারী পরিচালক জয়নাল মোল্লা। পরিদর্শনকালে টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলেও যেকোনো সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে ৬০ কিলোমিটার মহাসড়কটির ২৭ কিলোমিটার সড়ক মেরামত বাবদ প্রায় ৩৬ কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে।

দুর্ঘটনা কবলিত সড়কটি নিরাপদ করতে মহাসড়কে কার্পেটিং, ভূমি উন্নয়ন, পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, শক্তিশালীকরণ, সার্ফেসিং ও বাস-বে নির্মাণ করার কথা। কিন্তু সবগুলো লক্ষ্য যথাযথভাবে পূরণ হয়নি। ফলে পুন:মেরামত বাবদ আরও কার্যক্রম রাখা হচ্ছে একই প্রকল্পের আওতায়।

আইএমইডি’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অনুমোদিত ডিপিপি(উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) অনুসারে মির্জাপুর(গড়াই) থেকে সখিপুর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কে থারমো প্লাস্টিক ম্যাটেরিয়ালের মাধ্যমে ৬ হাজার ৭৫০ মিটার  রোড মার্কিং করার কথা ছিল। অথচ ১ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয় করে মাত্র ১ হাজার ৯০০ মিটার রোড মার্কিং করা হয়েছে। সব স্থানে রোড মার্কিংও নেই।

অন্যদিকে ৭৫টি ট্রাফিক সাইন, ৭৫টি সাইন পোস্ট ও ২৮টি কনক্রিট পোস্ট নির্মাণ করার কথা ছিল। প্রকল্পটি পরিদর্শনের সময় সড়কে তেমন কোনো সাইন, সিগন্যাল ও কনক্রিট পোস্ট দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে আইএমইডি। কিছু সাইন সিগন্যাল চুরিও হয়ে গেছে। ২৭ কিলোমিটারজুড়ে মাটির কাজ করা হলেও অনেক স্থানে ০ দশমিক ৯০ মিটার প্রশস্ত সফট শোল্ডার পাওয়া যায়নি।

বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ও পুনর্নির্মাণ কাজ এবং বিভিন্ন বাজার অংশে আরসিসি ইউ ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে পানি নিষ্কাশনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে আইএমইডি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

তবে ডিপিপি অনুসারে ছয়টি বাস-বে যথাযথভাবে নির্মিত হয়েছে।

আইএমইডি’র এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, দুই বছর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হলেও আড়াই বছর লেগেছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল জাতীয় মহাসড়কে পাশে রয়েছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বাজার, শিল্প কারখানা এবং স্কুল-কলেজ। সড়কের প্রশস্ততা ৩ দশমিক ৭০ কিলোমিটার হওয়ায় পাশাপাশি দু’টি যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল। সে প্রেক্ষিতে সড়কটিকে ৫ দশমিক ৫০ মিটার প্রশস্ত করা করা হলেও নতুন করে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাহিদা খানম বাংলানউজকে বলেন, ‘প্রকল্পের আইএমইডি প্রতিবেদনটি এখনও আমাদের হাতে আসেনি। সেটি পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবো’।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬

এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।