ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অ্যারোমা দত্ত ও নূর জাহান পেলেন রোকেয়া পদক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৬
অ্যারোমা দত্ত ও নূর জাহান পেলেন রোকেয়া পদক

এবার নারী উন্নয়ন ও নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় অ্যারোমা দত্ত এবং বেগম ন‍ূর জাহানকে রোকেয়া পদক দেওয়া হয়েছে...

ঢাকা: এবার নারী উন্নয়ন ও নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় অ্যারোমা দত্ত এবং বেগম নূর জাহানকে রোকেয়া পদক দেওয়া হয়েছে।
 
শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোকেয়া দিবস ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক তুলে দেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আগামীতে রোকেয়া পদক দুইজন থেকে বাড়িয়ে পাঁচজনকে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
 
রোকেয়া পদক প্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আরোমা দত্ত বলেন, এ পুরস্কার সব সংগ্রামী নারীর। আমি শুধু বাহক।
 
বেগম নূর জাহান বলেন, পদক পেয়ে দায়িত্ব বেড়ে গেলো। আরও নিবেদিত হয়ে কাজ করতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম।

নিচে অ্যারোমা দত্ত ও বেগম ন‍ূর জাহানের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হলো।

অ্যারোমা দত্ত
অ্যারোমা দত্ত ১৯৫০ সালের ২০ জুলাই কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সঞ্জীব দত্ত, মা প্রতীতি দেবী। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রবর্তক ও স্বাধীনতা সংগ্রামের বিশেষ কান্ডারি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের দৌহিত্রী তিনি।
 
অ্যারোমা দত্ত কুমিল্লার ফয়জুন্নেসা গর্ভনমেন্ট গার্লস হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং কুমিলা উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক্সপেরিমেন্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল লিভিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেন।
 
১৯৬৯-৭১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার পরিবার পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন। '৭৫-এ বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর তার পরিবারের ওপর নানারকম অত্যাচার সৃষ্টি হয়। এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশায় আত্মনিয়োগ করেন।
 
১৯৮০ সাল থেকে তিনি উন্নয়নকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছেন।
 
স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারী প্রতিনিধি অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব বিকাশ, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে দক্ষতা বৃদ্ধিতে অবদান, ভাসমান নারী নির্মাণ শ্রমিকদের দারিদ্র নিরসনে কাজ করেছন। অ্যারোমা দত্ত বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বাধীন প্রায় ২৫০ ক্ষুদ্র ও মাঝারি এনজিও তৈরি করেছেন।
 
বেগম নূর জাহান
বেগম ‍ন‍ূর জাহান ১৯৪৭ সালের ১ জুলাই পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার গুলিশাখালি ইউনিয়নের লক্ষণা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আব্দুল মান্নান এবং মা বেগম ফাতেমা। বেগম ন‍ূর জাহানের স্বামী ওয়াজেদ আলী। তিনি দুই ছেলে এবং দু্ই কন্যার জননী।
 
বেগম ন‍ূর জাহান ১৯৬৬ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। একই কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে এইচএসসি এবং কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকেক মেট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আমলাপাড়ার অগ্রণী প্রিপ্রারেটরী স্কুলে উপাধ্যাক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।
 
পেশাগত জীবনে শিক্ষকতার পাশাপাশি নারী অধিকার এবং নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৮ সাল থেকে ২০০৩ এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ জুন পর্যন্ত জাতীয় নারী সংস্থা কুষ্টিয়া জেলা শাখার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
 
'৯২ সাল থেকে জেলা নারী সমিতির সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
 
১৯৯৯ সাল থেকে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কুষ্টিয়া আজীবন সদস্য হিসেবে কাজ করছেন্।
 
১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদিকা হিসেবে কাজ করেছেন। ২০ মার্চ ১৯৭১ সালে গভীর রাতেও মাতৃত্বজনিত অসুস্থ অবস্থাতেও নিরলসভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা সেলাই করেছেন।
 
'৯২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ২০১৫ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
 
গল্পগ্রন্থ, কবিতা, আত্মকথন, রম্য রচনা করেছেন তিনি।
 
নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৬
এমইউএম/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।