ঢাকা: ঝালকাঠির ছত্রকান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক বাসচালক মোহন খানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দিনগত রাতে আশুলিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মোহন ৩ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালাচ্ছিল। তার হালকা যানবাহন চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও ভারী যানবাহন চালানোর কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ দুর্ঘটনা হয়।
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, গত ২২ জুলাই সকালে পিরোজপুর-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে ঝালকাঠির ছত্রাকান্দা এলাকায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইকৃত বাশার-স্মৃতি নামে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত এবং ৩৮ জন যাত্রী আহত হয়।
এ সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেন। এরপর ঘাতক চালক এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া থেকে ঘাতক বাসচালক মো. মোহন খানকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। আগে ঘাতক বাসের সুপারভাইজার মো. ফয়সাল ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তার চালক মোহনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, মোহন গত ২২ জুলাই সকাল ৯টার দিকে বাশার-স্মৃতি পরিবহনের বাসটি নিয়ে ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে যাত্রা শুরু করে। ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালে যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্টপেজ থেকে বাসটিতে আরও যাত্রী উঠানো হয় এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়িটি চালাতে থাকে।
পরবর্তীতে সকাল ৯ টা ৫০ মিনিটে ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় পৌঁছালে গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশের পুকুরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
এ সময় ফায়ার সার্ভিস, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ স্থানীয় জনগণ দুর্ঘটনায় বাসটির ভেতর থেকে ৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ১৭ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। তাদের মধ্যে ৮ জন নারী, ৬ জন পুরুষ ও ৩ জন শিশু।
বাকি ৩৮ জন আহত যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার মোহন ৩ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালাচ্ছিল। তার হালকা যানবাহন চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও ভারী যানবাহন চালানোর কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এছাড়াও ওই বাশার-স্মৃতি পরিবহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকলেও গাড়ির ফিটনেস ভালো ছিল না এবং মিটার নষ্ট ছিল।
দুর্ঘটনার পর মোহন কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং ঝালকাঠি, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় তার বিভিন্ন আত্নীয়ের বাসায় আত্মগোপনে থাকেন। অবশেষে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় আশুলিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৩
পিএম/জেএইচ