ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ওপরে হাতি, নিচে ট্রেন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৩
ওপরে হাতি, নিচে ট্রেন ...

চট্টগ্রাম: ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে পার হতে হবে লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্য। ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই অভয়ারণ্যে বিচরণ বন্যহাতির।

তাদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে রেললাইনের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ‘এলিফ্যান্ট ওভারপাস’।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এটিই প্রথম ‘এলিফ্যান্ট ওভারপাস’।

এই ওভারপাস দিয়ে হাতির দল এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাতায়াত করতে পারবে। অভয়ারণ্য এলাকার বন্যপ্রাণীরা যাতে রেললাইনে আসতে না পারে সেজন্য ওভারপাসের ওপর রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ গাছের চারা। রেললাইনের দুইপাশে সুরক্ষা দেওয়াল দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। হাতির চলাচলে সুরক্ষায় এ রকম আরও ওভারপাস তৈরি করা হচ্ছে।

দেখা গেছে, ৫০ মিটার দীর্ঘ এলিফ্যান্ট ওভারপাসের কাজ শেষ হয়েছে। ওভারপাসের ওপর রোপণ করা হয়েছে কলা, বাঁশসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। তৈরি করা হচ্ছে লবণ পানির লেক। দুই পাশে নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সুরক্ষা দেওয়াল তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। পুরো অভয়ারণ্যে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি আন্ডারপাস ও একটি ওভারপাস।

সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে নির্মিত এলিফ্যান্ট ওভারপাস পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। এশিয়ার কোনও দেশে বন্যপ্রাণী চলাচলের জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জায়গা নির্ধারণে জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দল প্রায় দুই বছর কাজ করেছে। সব কাজ শেষ হলে ওপর দিয়ে চলাচল করবে হাতিসহ নানান বন্যপ্রাণী, নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।  

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, বন্যহাতির দল যে করিডোর দিয়ে বেশি যাতায়াত করে, সেখানেই এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। তবে বন্যপ্রাণীরা ওভারপাস ও আন্ডারপাস দিয়ে যাতায়াতে অভ্যস্ত নয়। এভাবে চলাচল করতে একটু সময় লাগবে।

চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) প্রকল্পের নির্মাণকাজ করছে। এছাড়া বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
 
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ রেজাউল হক জানান, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে রেললাইনের দুইপাশে সুরক্ষা দেওয়াল নির্মাণকাজ চলছে। ১৫ অক্টোবর রেলপথে ট্রায়াল রান হবে। ২৮ অক্টোবর দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৩
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।