সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার ভরারগাঁও গোফরাঘাট জলমহালে মাছ লুট হয়েছে। এ ঘটনায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ প্রায় দুই হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন কচুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশ্বর দাস খোকা।
বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) দুপুরে মাছ লুটের ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে আটক করেছে দিরাই থানা পুলিশ। বুধবার সকাল ৭টার দিকে সংঘবদ্ধভাবে প্রায় দুই হাজার লোক জলমহালে প্রবেশ করে আনুমানিক এক কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী লংকেশ্বর দাস খোকা এজাহারে উল্লেখ করেন, কচুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জলমহালের ইজারা নিয়ে এবং নিয়মিত খাজনা, ভ্যাট পরিশোধ করে মাছ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা চালিয়ে আসছিল। গত দুই বছর ধরে জলমহালটিকে মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে রাখা হয়েছিল।
গত বুধবার সকালে দিরাই থানার কল্যাণী গ্রামের জীবন রায় (৪৫), চন্দ্রপুর গ্রামের এরশাদ মিয়া (৩২) ও হুমায়ূন (২০), বাউসী গ্রামের বাধন বৈষ্ণব (২২), সমীরণ বৈষ্ণব (১৯) ও মৃদুল বৈষ্ণব (১৯), ভাঙ্গাডহর গ্রামের পিন্টু তালুকদার (৩২) ও মৃদুল দাস (২৮), স্বরমঙ্গল গ্রামের আব্দুল তাহিদ (৪০), একই গ্রামের রমজান (৪০), রায়হান (৩৮), দবির মিয়া (৩৫), ছালিক মিয়া (৩৮), সম্রাট মিয়া (৫৫), সাজিদ মিয়া (২৭), হামিদ মিয়া (৪০), জিয়াবুর (৪০), ফরদি মিয়া (৪৫), নাহিদ (২৭), মোহন মিয়া (৪০), কায়েছ মিয়া (২২) এবং ঘাগটিয়া গ্রামের রজত মিয়া (৩৫); এজাহারভুক্ত এই ২২ জনসহ আরও প্রায় দুই হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি জলমহালে প্রবেশ করে অবৈধভাবে মাছ ধরতে শুরু করেন। জলমহালে থাকা আইড়, বোয়াল, রুই, কাতলা, কার্প, গ্রাস কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ অবৈধভাবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
সংবাদ পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে জীবন রায়, এরশাদ মিয়া, হুমায়ূন, বাধন বৈষ্ণব, সমীরণ বৈষ্ণব, মৃদুল বৈষ্ণব, পিন্টু তালুকদার ও মৃদুল দাসকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের মাছ ধরার সরঞ্জামসহ থানায় নিয়ে যায়। দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ থানা পুলিশের একাধিক টিম এবং উপজেলা এসি ল্যান্ড অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, এ ঘটনায় দিরাই থানায় দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত ২২ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই হাজার ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলার অন্যান্য বিল থেকে যারা অবৈধভাবে মাছ আহরণের চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, জেলার তিনটি উপজেলা দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ উপজেলার ৯টি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অন্তত ৫ কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন ইজারাদাররা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৫
এমজেএফ