ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের পাল্লা আড়াইশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের পাল্লা আড়াইশ বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম! ছবি: দীপু মালাকার

শ্যামবাজার (ঢাকা) থেকে: এমনিতেই বৃষ্টিতে অবস্থা কাকভেজা। তারপর গেছে ব্যাগ ছিঁড়ে। বিক্রেতা পেঁয়াজের পাল্লায় আর পাঁচ টাকা বেশি চাইতেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন ক্রেতা সাইফুল ইসলাম।

রাগে গজগজ করতে করতেই নিজে আওড়াচ্ছিলেন, ‘‘সেদিনও কিনলাম কেজি ২০-২২ টাকায়। এখন দিতে হবে ৫০ টাকা।

মানুষ কী না খেয়ে থাকবে?’’

তরকারিতে নিত্য ব্যবহার্য পেঁয়াজ নিয়েই এই ক্ষোভ প্রকাশ সাইফুলের। লোকটা বুড়িগঙ্গার ওপারে জিঞ্জিরা থেকে এপারের শ্যামবাজারে এসেছেন। খুচরা বাজারে দাম চওড়া বলেই অপেক্ষাকৃত কম দামে পাওয়ার আশায় একটু বেশি পরিমাণে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছেন সদরঘাটের দক্ষিণে নদীতীরে ফরাশগঞ্জ-লালকুঠি এলাকার এই শ্যামবাজারে।

কিন্তু তার আশা মনেই থাকলো। শ্যামবাজারের কোনো পেঁয়াজ দোকানি সাইফুলকে আড়াইশ’ টাকার কমে পাল্লা দিলেন না। সকাল থেকেই আকাশ গলে ভারী বর্ষণ হতে থাকলেও কারও জন্য গললো না এই বিক্রেতার মন!

পাল্লায় পাঁচ কেজি। আড়াইশ’ টাকা পাল্লার অর্থ প্রতিকেজি ৫০ টাকা। অথচ এই পাল্লাই নাকি সপ্তাহ দুই আগে ছিল ১২০ থেকে ১২৫ করে। সে কথা সাইফুলের কাছে বলছিলেন বিক্রেতা নেয়ামত।

ফরাশগঞ্জ রোডে নেয়ামতের মতোই পেঁয়াজের পসরা সাজিয়ে বসেছেন কালাম, ফরহাদ, সেলিমরা।
 
কী কারণে দাম বেড়ে গেছে? সব দোকানিরই এক কথা, ‘‘ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ আসা কমে গেছে। ’’ কারণ, বাংলাদেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, তাতে নাকি একমাসও চলার কথা না। আমদানি পেঁয়াজের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হয় ভোক্তাদের।
 
এখান থেকে পাল্লায়-মণে নিয়ে যাওয়া পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৫৫-৬০ টাকায়। কালাম-ফরহাদরা পেঁয়াজ এনেছেন ফরিদপুর থেকে। বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের পেঁয়াজই শ্যামবাজারে আসে বেশি।

সেলিম হোসেন বিক্রি করছিলেন ভারতীয় পেঁয়াজ। সকাল ৮টা বাজতেই কয়েক বস্তা শেষ হয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে অলস বসেছিলেন। জানালেন, পাল্লা ২০০ টাকা বিক্রি করেছেন ভারতীয় এ পেঁয়াজ। গত রোজার ঈদের সময় এই পেঁয়াজের দামও অনেক কম ছিল।

পেঁয়াজের বাজারের এই হিসেব কষতে কষতে ফরাশগঞ্জের জনতা কৃষিপণ্য কম্বিনেশনে কথা হচ্ছিল বিক্রেতা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে।

তিনি জানাচ্ছিলেন রসুন-আদার খবর। তাদের দোকানে দেশি রসুনের পাশাপাশি ভারতীয় রসুনও পাওয়া যায়। আছে চায়না, বার্মা (মায়ানমার), ইন্দোনেশিয়ার আদাও।

প্রতিপাল্লা ভারতীয় রসুন তারা বিক্রি করছেন ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। আর দেশীয় রসুন ২৫০-৪০০ টাকা পর্যন্ত।

আর আদা চায়নারটা কেজিপ্রতি ১০০ টাকা, বার্মারটা ৪০-৫০ টাকা। ভারতীয় আদার মধ্যে শিলংয়ের আদা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা, কলকাতার কালো আদা কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আদার দাম স্থিতিশীল থাকলেও বাড়তে পারে পেঁয়াজের দাম। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাদের পেঁয়াজ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটলে বাংলাদেশের আমদানিও কমে যাবে। আর আমদানি কমতে থাকার অর্থ বর্তমান বাজারের চড়া দরই।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা আগস্ট ১১, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।