ঢাকা, রবিবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

নরসিংদীতে আটক চাঁদাবাজদের ছাড়িয়ে নিতে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৩১, অক্টোবর ৪, ২০২৫
নরসিংদীতে আটক চাঁদাবাজদের ছাড়িয়ে নিতে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন শামীম: ফাইল ফটো

নরসিংদী: নরসিংদীতে আটক চাঁদাবাজদের ছাড়িয়ে নিতে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা করা হয়েছে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে নরসিংদী পৌর শহরের আরশিনগর মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন শামীমের (সদর সার্কেল) নেতৃত্বে একটি টিম সদর উপজেলার পুরানপাড়া এলাকায় এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে শহরের আরশিনগর মোড়ে কয়েকজন ব্যক্তি যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ রমজান ও সেলিম নামে দুইজনকে হাতেনাতে আটক করে।

আটকদের আটক হওয়ার খবর জেনে ইজারাদার মো. আলমগীরসহ ৩০ থেকে ৪০ জন লোক ঘটনাস্থলে আসে। তারা আটকদের ছাড়িয়ে নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে হুমকি দিতে থাকে। এতে পুলিশ সুপার তাদের ছাড়তে নারাজ হলে বিনা উসকানিতে তারা পুলিশ সুপারের ওপর হামলা চালায় এবং কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারান। এ সুযোগে তারা দুই চাঁদাবাজকে নিয়ে সটকে পড়ে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ফরিদা গুলশানা কবির বলেন, আনোয়ার হোসেনের ঘাড় ও পায়ে আঘাতজনিত রক্ত জমাট বেঁধেছে। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, সকালে নিয়মিত টহল চলাকালে আমি আরশিনগর এলাকায় দুই ব্যক্তিকে যানবাহন থেকে টাকা তুলতে দেখি। তাদের জিজ্ঞাসা করি ‘কিসের টাকা তোলা হচ্ছে?’ জানাই যে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে চাঁদা তোলার বিষয়ে। এসময় আমি দুইজনকে হাতেহাতে আটক করে তাদের জিজ্ঞাসা করতে থাকাবস্থায় মুহূর্তের মধ্যে ৩০-৪০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমি মাটিতে পড়ে গেলে তারা কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ি। পরে আমার সঙ্গীয় ফোর্সসহ স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসারত থাকাবস্থায় আমার জ্ঞান ফিরে। প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাঁদাবাজদের ছাড়িয়ে নিতে ইজারাদারের লোকজন এ হামলা করেছে।

নরসিংদী পৌর সভার সিএনজি-অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ইজারাদার মো. আলমগীর বলেন, পৌর সভার দেওয়া নিয়ম নীতি অনুসরণ করেই ইজারার টাকা তোলা হয়। এরআগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম আমার দুইজন লোককে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে। আজকেও ইজারার টাকা তোলার সময় উনি দুইজনকে আটক করে। আমি খবর পেয়ে গেলে তিনি হাইকোর্টের কথা বলে কিন্তু আমি পৌরসভার অনুমতি নিয়ে টাকা উঠাচ্ছি। এ সময় স্বজনরা আটকদের ছাড়িয়ে নিতে অনুনয় বিনয় করে। এসময় ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ওপর হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের ওপর হামলার খবর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এ ব্যাপারে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ করেননি।

জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।