ঢাকা, রবিবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

ম্যাচসেরা নারী ক্রিকেটার মারুফার বিজয়ে খুশি পরিবার ও এলাকাবাসী 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:১৩, অক্টোবর ৪, ২০২৫
ম্যাচসেরা নারী ক্রিকেটার মারুফার বিজয়ে খুশি পরিবার ও এলাকাবাসী  মারুফা আক্তার

নিজের জমিতে হালচাষে বাবাকে গরুর পরিবর্তে সাহায্য করতো মারুফা। এতো বাধা বিপত্তি কাটিয়ে বিশ্বমঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করছে গ্রামের মেয়ে মারুফা।

পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। কিন্তু ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসেন মারুফা আক্তার। ক্রিকেট তার ধ্যানজ্ঞান। অজপাড়াগাঁয়ের একজন মেয়ের ক্রিকেট খেলা খুব সহজে মেনে নিতে পারেনি এলাকার মানুষ। তবুও থেমে যাননি মারুফা।  

পড়ালেখার পাশাপাশি বাবাকে কৃষিকাজে সহায়তা আর ত্রিকেট খেলা দুটোই চলেছে সমান তালে। পরিত্যক্ত রেললাইনের পাশে অনুশীলন করে বেড়ে উঠেছেন মারুফা। একে একে আসতে থাকে তার সাফল্য।  

২০২৫ আইসিসি নারী বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের আগের সেরা সাফল্য ছুঁয়ে ফেলল তারা। গত ২ অক্টোবর কলম্বোতে ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ দল। তারা এর আগে মাত্র একবারই (২০২২ সালের আসরে) ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছিল। সেবারও টাইগ্রেসরা একটি ম্যাচ জিতেছিল, প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।

দুর্দান্ত জয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন ম্যাচসেরার পুরস্কার জয়ী পেসার মারুফা আক্তার। দুর্দান্ত ইন সুইং ডেলিভারিতে প্রথম ওভারেই দুটি শিকার ধরেন তিনি। পাকিস্তানের ওমাইমা সোহেল ও সিদরা আমিনকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান। দুজনই গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান। নীলফামারীর এক্সপ্রেসের দুর্দান্ত পারফমেন্সে গোটা দেশবাসী আনন্দিত ফেসবুকে বইছে আনন্দের বন্যা।  

সরেজমিনে মারুফা আক্তারের বাড়ি নীলফামারী জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের কাদিখোলে গেলে তার বিজয়ে পরিবার ও প্রতিবেশী বেজায় খুশি। ওই এলাকার আইমুল্যার ২ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মারুফা আক্তার। ক্ষেতে কাজ করার সময় কথা হয় তার সঙ্গে।  

তিনি বলেন, প্রথম প্রথম আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। মেয়ে মানুষ কেন এসব ক্রিকেট খেলবে।  মেয়েটির শক্ত মনোবল ও ভাইদের সহযোগিতায় এতটা পথ পাড়ি দিয়েছে। আমি সবার দোয়া চাই।  

বাঘিনি কন্যা মারুফা আক্তারের মা মর্জিনা বেগম বলেন, খেলার দিন আমি জায়নামাযে বসে দোয়া করেছি। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের।  বাবার টাচ ফোন না থাকায় দেখে কথা বলতে পারেনি তার বাবা। মারুফার ভাই আহসান হাবিব বলেন, খুব কষ্ট করে তাকে সাইকেলে চড়িয়ে শহরে নিয়ে ক্রিকেট খেলা শিখিয়েছি। প্রথমদিকে খুবই কষ্ট করেছে সে।  

প্রতিবেশীরা জানান, মারুফা তার বাবার বর্গা জমিতে মই টেনেছে, হালচাষ করে বাবাকে সহযোগিতা করেছে। প্রথমে আমরা মারুফার কাজে খুশি হতে পারিনি। এখন দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। দোয়া করি আরও বড় হোক মেয়েটি।  

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।