ঢাকা: আগামী ফেব্রুয়ারিতেই রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই রাজধানীতে দু’টি মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হবে। মেট্রোরেল রুট-১ হবে এয়ারপোর্ট থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার-আমেরিকান দূতাবাস-রামপুরা-মালিবাগ ক্রসিং- মৌচাক হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত।
আর মেট্রোরেল রুট-৫ হবে গাবতলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর ১- মিরপুর ১০- মিরপুর ১৪- ক্যান্টনমেন্ট-কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ- গুলশান- মাদানী অ্যাভিনিউ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত।
প্রথম রুটটি হবে (প্রাথমিক পর্যায়ে) ২৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার। এরমধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড থাকবে ৬ কিলোমিটার। যার অবস্থান হবে মালিবাগ ক্রসিং থেকে মৌচাক হয়ে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত এবং কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে। বাকি ২০ দশমিক ৬ কিলোমিটার হবে এলিভেটেড।
আর দ্বিতীয় রুটটি হবে (প্রাথমিক পর্যায়ে) ১৬ কিলোমিটার। এরমধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড থাকবে ৫ দশমিক ৯ কিলোমিটার। যার অবস্থান হবে মিরপুর ১৪ থেকে ক্যান্টনমেন্টের নিচ দিয়ে কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ-গুলশান-মাদানী এভিনিউ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত। বাকি ১০ দশমিক ১ কিলোমিটার হবে এলিভেটেড।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেল রুট দু’টির কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) উপস্থাপন হয়ে গেছে। সংশোধিত স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্লান (আরএসটিপি) স্টেয়ারিং কমিটিতে আছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই আরএসটিপি অনুমোদন হয়ে গেলে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হবে।
এছাড়া, বিজয়নগর থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ফ্লাইওভার, বিমানবন্দরের সামনে টানেল এবং গাবতলীতে একটি ইউ-লুপ (ক্রসিং ছাড়িয়ে বৃত্তাকার পথে ইউটার্ন করা) নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান ওবায়দুল কাদের।
বিমানবন্দরের সামনে টানেল নির্মাণের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত টানেল নির্মাণ করা হবে। এর একটি লিংক থাকবে হাজী ক্যাম্পের সঙ্গে। যাত্রীরা টানেল ব্যবহার করে বিমানবন্দরে সরাসরি যেতে পারবেন। এই টানেল নির্মাণের অর্থ দেবে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এবিডি)।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিজয়নগর থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সহযোগীতায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করবে।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেলে ঢাকা শহরের সঙ্গে সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ প্রকল্পটিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ফ্লাইওভারটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যানজট নিরসন ও পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন যোগাযোগ মন্ত্রীকে গুলিস্থানে একটি বাস টার্মিনাল করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এলোমেলোভাবে গাড়ি রাখার কারণে গুলিস্থানে ভয়াবহ চিত্র বিরাজ করছে। এখানে একটি বাস টার্মিনাল করে দেওয়া যেতে পারে।
এ সময় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাস্তার উপরে গাড়ি রাখা বন্ধ করতে হবে। ঢাকা শহরে ৩০ থেকে ৪০ বছরের লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি চলে। পৃথিবীর কোথাও রাজধানীতে এমন গাড়ি চলে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫/আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা
এএসএস/জেডএস