বরিশাল: ‘টিপু বিদেশে থাকাকালীন তার স্ত্রী শারমিন আক্তার টুনকু’র (২৮) সঙ্গে মুনসুরের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। টিপু বিদেশ থেকে এলে মুনসুর কৌশলে ভাইকে চাকরির কথা বলে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে নিয়ে আসেন।
একপর্যায়ে টিপুর স্ত্রী দুইজনের সংসার করতে পারবে না বলে মুনসুরকে জানান এবং টিপুকে হত্যা করার পরামর্শ দেন। পরে মুনসুর বরিশালে এসে ৪ জনকে ১ লাখ টাকায় ভাড়া করে হত্যার পরিকল্পনা আটে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মুনসুর ভাই টিপুকে তাদের মালিকের ৩ লাখ টাকা লুটের নাটকের গল্প শুনিয়ে তাতে অভিনয় করার প্রস্তাবে রাজি করান। এরপর মুনসুর ঘটনার দিন সন্ধ্যায় নাটকের দৃশ্যপট অনুযায়ী ভাই টিপুকে কাঠপট্টি রোডের তাদের ভাড়া বাসার একটি কক্ষে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে মুখ টেপ দিয়ে আটকে দেয়। এরপর ভাইকে নাটকের পরের দৃশ্যপট তার আসা ও পুলিশকে জানানোর বিষয়ে অবহিত করে সটকে পড়েন। পরে ওই ভাড়াটিয়া হত্যাকারীরা এসে তার ভাইকে হত্যা করে।
বরিশাল নগরের কাটপট্টি এলাকা থেকে চট্টগ্রামের বাসিন্দা খালেদ মো. টিপু নামে এক ব্যক্তির হাত-পা-মুখ বাধা অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধারের ১৬ দিনের মধ্যেই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন-বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ছোটভাই নূর উদ্দিন জাহেদ মুনসুর, বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকার শুক্কুর মোল্লা ওরফে শুক্কুর (২৫), পলাশ দাস(২১), চরমোনাই এলাকার বাসিন্দা ও মোহম্মদপুর এলাকার ভাড়াটিয়া মো. হাসান (২২) এবং কাশিপুরের বাসিন্দা ও নগরের শ্রীনাথ চ্যাটাজিং লেনের ভাড়াটিয়া মো. আলতাফ হাওলাদারকে (৫০) আটক করা হয়।
আসামিদের আটকের পর বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে তাদের আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(১০ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার এসি আজাদ রহমান।
মৃত খালেদ মো. টিপু ও তার ভাই নূরউদ্দিন জাহেদ মুনসুর চট্টগ্রামের কর্ণফুলি থানাধীন চরফরিদ এলাকার মো. সোলায়মানের ছেলে।
তারা বরিশালের পোর্ট রোডের সরদার এন্টারপ্রাইজ নামে মাছের আড়তে চট্টগ্রামের মাছ ব্যবসায়ী ওসমানের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে খালেদ মো. টিপুর হত্যার পর থানা পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহটি হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরদিন মৃতের ছোটভাই নূর উদ্দিন জাহেদ মুনসুর বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদা হোসেন, ওসি তদন্ত আতাউর রহমান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জালাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এমএস/পিসি