বলছি সাভার অধরচন্দ্র মডেল হাইস্কুল মাঠের সেই বকুলতলার কথা। গাছের গোড়া এখন সিমেন্টে বাঁধানো।
রানা প্লাজা ধসের কালের সাক্ষী এই অধরচন্দ্র মডেল হাইস্কুল। মূল ভবনের বারান্দায় ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বিকেল থেকে সারি সারি করে রাখা হয় শ্রমিকদের মরদেহ। মরদেহের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বারান্দা থেকে বকুলতলায়, কখনওবা মাঠে এনে রাখা হয় শ্রমিকদের মরদেহ।
বকুলতলা থেকে একটু বাঁ দিকে এগিয়ে যেতেই স্কুলের ক্যান্টিন। এখান থেকেই উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে নিয়ে গেছেন স্বজনরা।
আজও নিহত শ্রমিকদের স্বজনদের দেখা মেলে এই অধরচন্দ্র স্কুলের মাঠে- জানালেন স্কুলের দপ্তরি সামছুল হক।
রানা প্লাজার ধসের দিন থেকে ১৮ দিন স্থগিত ছিলো অধরচন্দ্র মডেল হাই স্কুলের কার্যক্রম। দুর্ঘটনার দিন দুপুর থেকে উদ্ধার করা মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এনাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে। এনাম মেডিকেলে আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার দিকে খেয়াল রেখে মরদেহ অধরচন্দ্র মডেল হাইস্কুলের মাঠে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টায় সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। ভবনের কয়েকটি তলা নিচে বসে যায়। কিছু অংশ পাশের একটি ভবনের ওপর পড়ে। এ দুর্ঘটনায় এক হাজার ১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয় যা বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। সাধারণ জনগণ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালায়। ভবনটিতে ৫টি পোশাক কারখানা, একটি ব্যাংক এবং একাধিক অন্যান্য দোকান ছিল। ফাঁটল থাকায় ভবন না ব্যবহারের সতর্কবার্তা থাকলেও তা উপেক্ষা করেছিলেন ভবনটিতে থাকা পোশাক কারখানার মালিকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
ইউএম/আরআর/আরআই