ঢাকা: বিশ্বের ইতিহাসে জেল হত্যা এক চরম নিন্দনীয় অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘জেল হত্যা দিবস’ স্মরণে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, কলঙ্কিত জেল হত্যাকাণ্ড আমাদের জাতীয় জীবনের আরেকটি বেদনাদায়ক দিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এদেশ থেকে মুছে ফেলার জন্য এবং স্বাধীনতাকে অর্থহীন করার জন্যে এদেশে কুলাঙ্গার ও স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি মিলে জেল হত্যার মতো নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড চালায়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এদেশে পাকিস্তানি ভাবধারার শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল ৭১’র পরাজিত শক্তি, ধর্মান্ধ শক্তি এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীরা। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে জলাঞ্জলি দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপচেষ্টা হয়েছে। ৩ নভেম্বর জেল খানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে খুনি মোসতাক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এদেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির বীজ রোপণ করেন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়েছেন, কিন্তু জাতির পিতার রক্তের সঙ্গে কোনদিন বেইমানি করেনি। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই চার জাতীয় নেতার আত্মত্যাগ ও অবদান আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে চির অম্লান, চির ভাস্কর ও চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জাতি চিরদিন তাদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
লেখক ও কলামিস্ট সাংবাদিক অজিত সরকার বলেন, জেলহত্যার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন পদে থেকেও সেদিনের ঘটনা দমনে কোন ভূমিকা রাখেননি। বরং তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেনা অফিসারদের হত্যাকাণ্ডে মদদ যুগিয়েছেন। সেদিন জিয়াউর রহমান তার পবিত্র দায়িত্ব কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করলে ও সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা আনয়ন করলে জেল হত্যাকাণ্ডের মতো জঘন্যতম ঘটনা সংঘটিত হতো না।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ জাকারিয়া মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. ফিরোজ আহমেদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. লিয়াকত হোসেন মোড়ল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলম ও ভুগল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল কাদের প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২০
এমএমআই/জেআইএম