ট্রাভেলার্স নোটবুক
দিগন্ত বিস্তৃত গ্রেট রিফট ভ্যালি, ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির পাহাড় দেখলাম। পাহাড়ের উপরে, থম্পসন ফলসের পাশে বসে চমৎকার রেস্তোরাঁয় দুপুরের
ঢাকার বাইরে গোধূলিলগ্ন উপভোগ করতে চাওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। একদিকে সদরঘাটে বুড়িগঙ্গার পানি দেখতে বিবর্ণ, অন্যদিকে বুকভরে শ্বাস
কাছে গিয়ে নাড়াচাড়া করতেই আফগানি ভাঙা আরবী ও ইংরেজি মিশিয়ে বললেন, 'আইফোন সিক্স। জাদিদ। আফজাল।' অর্থ হলো, এটা আইফোন সিক্স, নতুন,
রোদে জ্বলে যাওয়া প্রকৃতি ধূলার আস্তরণের নিচে ঢাকা পড়ে আছে। যতবার আমাদের গাড়ি পানিশূন্য নদীগুলোকে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছিল,
হঠাৎ করেই আবহাওয়া ভালো হয়ে গেছে। পরিষ্কার আকাশে হাজারো তারার মেলা! বাতাসের লেশ মাত্র নেই। অথচ আগামী তিনদিনই খারাপ আবহাওয়ার
আজ লারকে পাসের দিকে যাওয়া ট্রেকার নেই বললেই চলে। সকালের দিকে কিছু মালবাহী খচ্চর আর তাদের চালকদের চলাফেরা ছিল। এখন আর কেউ নেই লারকে
আমাদের বেসক্যাম্পের দক্ষিণে ঘণ্টাখানেক হাঁটলে শুরু হয়েছে হাই ক্যাম্পে যাওয়ার চড়াই। অনেকটা পথ এখান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
সূর্যের আলোয় ঝলমল করে উঠলো পুরো উপত্যকা। আমরা আজ সামদোর পথে পা বাড়াবো। লজে থাকা অন্য দেশের ট্রেকাররাও সামদো যাবে। সবাই মিলে কাফেলার
মুহিত ভাই জানালেন অন্তত চার হাজার মিটার পর্যন্ত হাইট গেইন করবেন। আমি তো মনে মনে মানাসলু বেস ক্যাম্পে যাওয়ার-ই পরিকল্পনা এঁটে বসে
প্রথমবারের মতো টের পেলাম আমরা এখন হাই অল্টিচিউডে আছি। শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হচ্ছে। চড়াইয়ের মাথায় বৌদ্ধ গোম্ফা থেকে ভেসে আসছে
এ ওঠার যেন কোনো শেষ নেই। মুহিত ভাই এর মধ্যেও রসিকতা করে বলেন, যতটুকু নামিয়াছ উঠিতে হইবে তার দ্বিগুণ। আমরাও বিনা বাক্য ব্যয়ে শুধু
আমরা সির্দ্ধিবাসে এসে চা বিরতি দিলাম। আজই প্রথম চোখে পড়লো তিব্বতি বংশোম্ভূত লোকজন। এ অঞ্চলের নিচের দিকে
এর মধ্যে এক জায়গায় গত বছর ১৬ জন প্রাণ হারান পাহাড় ধসে। আজকের পথটিও বেশ বৈচিত্র্যময়। ঘণ্টাখানেক চলার পরই পথে বিখ্যাত তাতোপানি।
ভোরের আলো ফুটতেই আবার পথে বেরোনোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেলো। গন্তব্য খোরলাবেসি, ৯৭০ মিটার। নাস্তা সেরে সেই সাড়ে সাতটার মধ্যেই পথে বেরিয়ে
সাত সকালেই খুলে গেছে দোকানপাট। বেরিয়ে পড়েছে মানুষ জীবনের প্রয়োজনে। প্রথম অতি উচ্চতায় ট্রেকিংয়ের শুরু বলে সবাই নানা রকমের
আরুঘাট মূলত নেপালের দার্দিং এবং গোর্খা জেলার মাঝে পড়েছে। যারা মানাসলু অঞ্চলের পর্বত অভিযানে আসেন অথবা মানাসলু সার্কিট ট্রেকিং
মাত্র কয়েকটা দিন আগের ঘটনাই তো। পাইলটের ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের প্লেন তখন উড়ছে ৩৬ হাজার ফুট উপর দিয়ে। আকাশ অতটা পরিষ্কার না। ক্ষণে
ভয়ংকর সুন্দর উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ পেরিয়ে, বুক ভরে সতেজ শ্বাস নিয়ে তারপর আবার ঝরনার জলে গোসল? প্রকৃতির কোলে নিজেকে সম্পূর্ণ সঁপে দিতে
জানলাম, কেনিয়া অত্যন্ত শুষ্ক একটি দেশ। এখানকার বেশিরভাগ ভূখণ্ডই গাছহীন, এ কারণেই সাদা রং। সবুজ অংশগুলো অবশিষ্ট বন-জঙ্গল যেখানে
নির্দিষ্ট কোন স্থান নয়-পুরো দ্বীপটিই দেখার মত। সাগর পেরিয়ে জনপদে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সবুজের সমারোহ, ম্যানগ্রোভ বন। রাস্তার পাশে
পুরোনো সংবাদ গুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন