ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বসুন্ধরার উপহার

‘ঈদে আর চিন্তা নাই’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২১
‘ঈদে আর চিন্তা নাই’

ঢাকা: বসুন্ধরা গ্রুপ মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্তমানবতার সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। দেশের দুর্যোগকালে অসহায়দের সহায়তা করে থাকে।

বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি ভরসাস্থল বসুন্ধরা।  

রোববার (৯ মে) গাজীপুরের শ্রীপুর, ময়মনসিংহ, একই জেলার নান্দাইল ও ত্রিশাল, মুন্সীগঞ্জের সদর, টঙ্গিবাড়ী ও সিরাজদিখান উপজেলা এবং রাজধানীর উত্তরায় বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ঈদ উপহারসামগ্রী (চাল, ডাল, তেল, সেমাই, চিনি, ছোলা, লবণ) বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনরা।

আর সাহায্য পেয়ে হাসি ফোটে অসহায় মানুষের মুখে। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়। নান্দাইলের সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ মাঠে ৩০০ দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়।  

ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব বিতরণ করেন।  

উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ জুয়েল, পৌরমেয়র রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া, নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ উদ্দিন, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এতে সহযোগিতা করে স্থানীয় শুভসংঘ।  

আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন বলেন, সুদূর ঢাকা থেকে আমার নান্দাইলের অসহায় মানুষের জন্য বসুন্ধরা যে উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছে, তার জন্য এলাকার সবার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মানবিক কাজে বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় এগিয়ে আছে। তাদের শিল্প গ্রুপে লাখ লাখ মানুষ কর্ম পেয়েছে। যখন দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বা বিত্তশালীরা এগিয়ে আসছে না, তখন বসুন্ধরা হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে অসহায়দের মধ্যে। এটা উদাহরণ।  

হাসান মাহমুদ জুয়েল বলেন, বড় প্রতিষ্ঠানের মনও বড়। এ কারণেই বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনাম কুড়িয়েছে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হাতে বসুন্ধরার খাদ্য উপহার তুলে দেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান। পুরো কাজটি সুষ্ঠুভাবে তদারকি করেন ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম শফিক।  

ইউসুফ খান পাঠান বলেন, করোনার দুঃসময়ে বসুন্ধরার এমন সহযোগিতার কথা মানুষ মনে রাখবে। এই মহতী উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।  

এ কাজে সহযোগিতা করেন এম এ হাসিম, রাজা, সিয়াম, জিয়া, সেলিম, আদম, বাচ্চু, রবি, আনোয়ার, মারুফ, ইসমাইল, রনি, আলী খোকন মিয়া প্রমুখ। আয়োজনে সহায়তা করে শুভসংঘ। শ্রীপুরের সাতখামাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌর এলাকা, বরমী, তেলিহাটী ও কাওরাইদ ইউনিয়নের দরিদ্র রোগী, দুস্থ বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তি, দিনমজুর ও হকাররা পেয়েছেন বসুন্ধরার উপহারসামগ্রী।  

এর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা হয়।  

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ আবদুল লতিফ, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম মাহফুল হাসান হান্নান উপস্থিত ছিলেন।  

সভায় শ্রীপুর উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম হিরণের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন সাতখামাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিয়াকত আলী দুলাল, টেপিরবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সেলিম আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর মোড়ল, জেলা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মাহবুব হাসান, যুবলীগ নেতা পিন্টু আকন্দ, ছাত্রলীগ নেতা কাইয়ুম শেখ প্রমুখ।  

সাতখামাইর গ্রামের জুলেখা বেগমের (৫৭) স্বামী নিরুদ্দেশ, ছেলেও খোঁজ রাখেন না। দুই বছর ধরে অসুস্থ তিনি। তার একার সংসারটি চলে মানুষের সাহায্যে।

বসুন্ধরার উপহার পেয়ে তিনি বলেন, অত কিছু কেউ কুনুদিন দিছে না। ঈদে আর চিন্তা নাই।
ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে শুভসংঘের উদ্যোগে বসুন্ধরার ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক এমপি, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ত্রিশাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান, এসি ল্যান্ড তরিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান, ময়মনসিংহ সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি রেজাউল করিম বাদল, ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খোরশিদুল মজিব, মোহাম্মদ সেলিম, মতিউর রহমান সেলিম, ত্রিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এইচ এম জোবায়ের, শুভসংঘের সভাপতি ফাতেহুল আলম শিশির, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান পলাশ প্রমুখ।

রাজধানীর উত্তরা ও কামারপাড়ার প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিধবা, ভিক্ষুক, রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহকর্মী, হকারসহ বহু অসহায় মানুষ বসুন্ধরার ঈদ উপহারসামগ্রী পান। উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) আঙিনায় শুভসংঘ আইইউবিএটি শাখার উদ্যোগে এসব বিতরণ করা হয়।  

এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুর রব।  আইইউবিএটির রেজিস্ট্রার মো. লুত্ফর রহমান, চিফ ইঞ্জিনিয়ার মফিজুর রহমান, কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের কো-অর্ডিনেটর উৎপল কান্তি দাস, পাবলিক রিলেশন অ্যান্ড প্লেসমেন্ট সেলের পরিচালক মো শরফুদ্দিন, উপ-পরিচালক আলামিন শিকদার শিহাব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন শুভসংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদেকুল ইসলাম। কামারপাড়া বস্তির দবির মিয়া চলাফেরা করেন স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে।

উপহার পেয়ে তিনি বলেন, আমার মতো পঙ্গু মানুষরে বড় উপকার করল বসুন্ধরা। ঈদের এই কয়েক দিন আর চিন্তা থাকব না।

মুন্সীগঞ্জ শুভসংঘের আয়োজনে বসুন্ধরার উপহার পৌঁছে দেওয়া হয় সদরের সৈয়দপুর জাজিরা এলাকা, টঙ্গিবাড়ীর একটি মাদরাসা ও সিরাজদিখানের কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় লোকজনের মধ্যে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান (সাবেক মেয়র ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান), অ্যাডভোকেট সুজন হায়দার জনি (আহ্বায়ক, নাগরিক সমন্বয় পরিষদ, মুন্সীগঞ্জ), স্বপন খান (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মুন্সীগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা), শাহরিয়ার হাসান জিসান (প্রতিষ্ঠাতা, ব্লাডম্যান ফাউন্ডেশন)।  

আরো উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের আবু মুহাম্মদ রুইয়াম, জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই, ফারহান আহাম্মেদ রাতুল, নাজমুল হাসান নিয়ন, শফিকুল ইসলাম আকাশ, কাজী ইমরান হোসেন, আফজল হোসেন, সাইফুল ইসলাম রনি, ওয়াশিউর রহমান বৃন্ত, নাজমুন নাহার মুনা, আলিফ মোহাম্মদ, মাহাবুব রানা, বিল্লাল হোসেন, প্রিতম ঘোষ, সাহেল খান, সাজিয়া ইসলাম, মিথুন হাসান, কিফাত পাটোয়ারী, তরিকুল ইসলাম জিদান, অরিদ হাসান, শাহরিয়ার জামান, ফয়সাল হোসেন, আফরিন আক্তার, রোবাইয়াত জাহান রাবেয়া, ফারদিন হাসান আবির, অনিক হাসান, ফাতেমা তুজ জোহরা রশ্মি, আসমাউল হুসনা মালিহা, সিফাত, তন্ময় মণ্ডল, মো. রাতুল, মো. রাজু, আব্দুল্লাহ আদর ও তানজিলা আক্তার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।